কালকিনিতে সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, নারীসহ আহত ৩০

লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৩০ ব্যক্তিকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। মাদারীপুর সদর হাসপাতাল, ২১ আগস্ট। ছবি: প্রথম আলো
লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৩০ ব্যক্তিকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। মাদারীপুর সদর হাসপাতাল, ২১ আগস্ট। ছবি: প্রথম আলো

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আজ বুধবার দুপুরে দফায় দফায় ইউনিয়নের রায়পুর এলাকায় সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটে। আহতের মধ্যে দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

মাদারীপুর সদর হাসপাতাল সূত্রে আহতদের মধ্যে ২০ জনের নাম জানা গেছে, তাঁরা হলেন, উপজেলার লক্ষ্মীপুর এলাকার রিপন মুন্সী (৪০), সোহেল সরদার (৩২), সত্তার হাওলাদার (৫৭), রিপন সরদার (৩৫), আবদুল রশিদ সরদার (৬০), রওসয়ারা বেগম (২৫), ফিরোজ সরদার (৩২), ইকবাল সরদার (৪০) ও তাঁর ভাই ইলিয়াস সরদার (৩৫), কায়উম খান (২১) ও তাঁর ভাই বিল্লাল খান (২৭), আলমগীর সরদার (৪০) ও তাঁর ভাই জাকির সরদার (৫৫), রাহিমা বেগম (৩৫), জসিম সরদার (৬০) ও তাঁর দুই ভাই ফরহাদ সরদার (৫৫)-জামাল সরদার (৪০), রাসেল সরদার (১৮) ও তাঁর ভাই রাজীব সরদার (১২) এবং একই এলাকার মোশারফ সরদার (৩৫)। আহত অন্য ব্যক্তিদের নাম তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফজলুর হক বেপারীর সঙ্গে বর্তমান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তোফাজ্জেল হোসেন গেন্দু কাজীর বিরোধ চলছে। আজ ফজলুর হক বেপারীর সমর্থক বারেক সরদারসহ কয়েকজন গেন্দু কাজীর পক্ষে যোগ দেন। এর জের ধরে দুপুরে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফাজ্জেল হোসেন গেন্দু কাজী প্রথম আলোকে বলেন, ‘খামাখা ফজলুর লোকজন এলাকায় হাঙ্গামা করছে। বাড়িঘর ভাঙচুর লুটপাট করছে। এর আগে গত সোমবার তারা আমাদের ওপর হামলা করেছিল। এখন আবারও হামলা করল। ফজলুর নির্দেশে তাঁর লোকজন আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। হামলায় আমাদের লোকজনই বেশি আহত হয়।’

লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের লোকই আহত হন। মাদারীপুর সদর হাসপাতাল, ২১ আগস্ট। ছবি: প্রথম আলো
লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের লোকই আহত হন। মাদারীপুর সদর হাসপাতাল, ২১ আগস্ট। ছবি: প্রথম আলো

লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুর হক বেপারী বলেন, ‘গেন্দু বিএনপির নেতা ছিলেন। এখন নব্য আওয়ামী লীগ করেন। তিনি এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করেন। এতে আমাদের লোকজন বেশি আহত হয়।’

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা ইমরানুর রহমান সনেট বলেন, ‘আহত অন্তত ৩০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা হাসপাতালে ভর্তি আছেন ও আশঙ্কামুক্ত। আমরা সাধ্য মতো সেবা দিয়ে যাচ্ছি।’

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ‘লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান গেন্দু কাজীর সঙ্গে সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুর হকের বিরোধ ছিল। বারেকসহ কয়েকজন ফজলুর পক্ষ ছেড়ে গেন্দুর কাজীর পক্ষে যোগ দেয়। এই কারণেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে আমরা দুজনকে আটক করেছি। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে।’