বিদেশি বোতলে নকল মদ

বোতলের গায়ে লাগানো লেভেল, কর্ক ও প্যাকেট দেখে বোঝার উপায় নেই বোতলটি নকল মদে ভরা। পানি, স্পিরিট, রং ও ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বিষাক্ত এই মদ তৈরি করছে একটি চক্র। বিদেশি মদের বোতল সংগ্রহের পরে নকল মদ তৈরিতে ওই চক্রের খরচ হয় ২০০ টাকা। তবে তা বিক্রি করে দেড় থেকে ৩ হাজার টাকায়।

চট্টগ্রাম নগরে পুলিশের সম্মেলনকক্ষে বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে নকল মদ তৈরির একটি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন নাছিম উদ্দিন, ইকরামুল হক, স্বপন পাল, ইমরান ফয়সাল ও জাহেদুর রহমান। তাঁদের কাছ থেকে স্পিরিট, নকল লেবেল, বোতলের কর্ক ও মদ তৈরির কেমিক্যাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ইকরাম ও স্বপন হোমিও ফার্মেসির এবং ফয়সাল ও জাহেদ প্রেসের মালিক।

এর আগে ১৪ আগস্ট চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানার বিশ্ব কলোনি মালিপাড়ায় মদপানে তিন বন্ধুর মৃত্যু হয়। তাঁরা হলেন বিশ্বজিৎ মল্লিক (২৮), শাওন মজুমদার (৩০) ও মিল্টন গোমেজ (৩২)। এই ঘটনার থানায় করা একটি অপমৃত্যুর মামলা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ চক্রটির সন্ধান পায়।

সংবাদ সম্মেলনে নগর পুলিশের উপকমিশনার (পশ্চিম) ফারুক উল হক বলেন, ঘটনার দিন নাছিম ও তাঁর এক সহযোগীর কাছ থেকে দেড় হাজার টাকায় বিদেশি মদ কেনেন বিশ্বজিৎ। তাঁরপর বন্ধুদের নিয়ে সেই মদ পান করেন। তিনজনের মৃত্যুর পর চট্টগ্রামের আকবর শাহ এলাকা থেকে নাছিমকে নকল বিদেশি মদসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার নাছিম জানিয়েছেন, বিভিন্ন হোটেল ও ভাঙারির দোকান থেকে বিদেশি মদের খালি বোতল সংগ্রহ করেন তাঁরা। পরে সেগুলো পরিষ্কার করে প্রেসে তৈরি করা লেবেল লাগান। প্যাকেটও তৈরি করা হয়। আর দামি ব্রান্ডের বোতলে ভরা হয় স্পিরিট, পানি ও ঘুমের ওষুধ। এক বোতল মদ তৈরি করতে ২০০ টাকা লাগলেও বিক্রি হয় দেড় থেকে তিন হাজার টাকায়। লাভের আশায় তাঁরা এ কাজ করেন। চার বছর ধরে এই কাজ করছেন তাঁরা।

চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, নকল মদ তৈরি চক্রের আরও কয়েকজন সদস্যকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এই বিষয়ে চট্টগ্রাম নগরবাসীকে সতর্ক হওয়ারও অনুরোধ করেছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।