সড়কে অসংখ্য গর্ত, ভোগান্তি

গোপালগঞ্জের কুয়াডাঙ্গা-চাপাইল সড়কে সৃষ্টি হওয়া বড় বড় গর্তে পানি জমে আছে।  ছবি: প্রথম আলো
গোপালগঞ্জের কুয়াডাঙ্গা-চাপাইল সড়কে সৃষ্টি হওয়া বড় বড় গর্তে পানি জমে আছে। ছবি: প্রথম আলো

পিচঢালাই উঠে সড়কের ইট-সুরকি বেরিয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। বৃষ্টিতে সেই গর্তে পানি-কাদা জমে। চাকা গর্তে পড়ে হেলেদুলে চলে যানবাহন। গোপালগঞ্জ শহরের কুয়াডাঙ্গা-চাপাইল সড়ক এখন বেহাল। এতে ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী।

গোপালগঞ্জ পৌরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুয়াডাঙ্গা থেকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতাল এবং চাপাইল যাতায়াতের জন্য এই বাইপাস সড়কটি ২০১২ সালে নির্মাণ করে পৌরসভা।

৩ জুলাই মৌলভীপাড়া, বিসিক এলাকা, স্টেডিয়াম, মহিলা কলেজ, পাসপোর্ট অফিসের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, সাড়ে ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের অধিকাংশ জায়গা ভাঙাচোরা। সড়কজুড়ে আছে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। এসব গর্তে পানি-কাদা জমে একাকার অবস্থা। বৃষ্টি হলেই গর্তগুলোয় পানি জমে যায়। এই পানি–কাদা মাড়িয়ে চলাচল করছে পথচারী ও যানবাহন। ইজিবাইক, অটোরিকশার চাকা ছোট-বড় গর্তে আটকে যায়। অনেক সময় ময়লা পানি গিয়ে পড়ে পথচারীর গায়ে। মোটরসাইকেল, ইজিবাইক এবং অন্য ছোট যানবাহন চলেছে হেলেদুলে। পথচারীদের হাঁটার জন্য জায়গা নেই।

মোটরসাইকেলের চালক ইব্রাহীম বলেন, ‘আমি কাশিয়ানী থেকে এসেছি, গোপালগঞ্জ আদালতে যাব। প্রধান সড়কে যানজট বেশি থাকায় এ রাস্তা দিয়ে এসেছি। এখান দিয়ে এসে তো বিপদে পড়েছি। রাস্তায় এত বড় গর্ত ও পানি, তা জানা ছিল না।’

অন্যদিকে হাঁটার রাস্তা দখল করে নিয়েছে মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশা। রাস্তায় ছোট-বড় গর্তে পনি জমে থাকায় মোটরসাইকেল ও রিকশাগুলো যেতে পারছে না। স্টেডিয়ামের পাশে অনেক সময় আটকে পড়ে হালকাসহ ভারী যানগুলো। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় ওই সড়কে চলাচলকারী সব যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের।

স্থানীয় লোকজন বলেন, প্রায় তিন বছর ধরে এ সড়ক বেহাল। গোপালগঞ্জ পৌরসভা থেকে বলা হচ্ছে, সড়কটি মেরামত করা হবে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

মৌলভীপাড়ার বাসিন্দা জিকু মোল্লা বলেন, শুকনো মৌসুমে ধুলাবালুর কারণে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা দুষ্কর হয়ে যায়। আর এখন কাদা–পানির ভোগান্তি। এ সড়ক দিয়ে স্টেডিয়ামের পাশে গেলে মোটরসাইকেল হাঁটার রাস্তা দিয়ে চালানো লাগে। না হলে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই।

স্টেডিয়ামের দুই ব্যবসায়ী বলেন, বৃষ্টি হলেই এ সড়কের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। বৃষ্টির দিনে তাঁদের মালামাল আনতে কষ্ট হয়। একটু বৃষ্টি হলে সড়কে পানি জমে যায়। তা ছাড়া মাঝেমধ্যে গাড়ির চাকা আটকে যায়। তাঁরা চান এ সড়ক শিগগিরই মেরামত করা হোক।

ভাঙা সড়কে যাত্রী নিয়ে আসতে চান না রিকশা ও ইজিবাইকের চালকেরা। যাঁরা আসেন তাঁরা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করেন। রিকশাচালকেরা বলেন, গর্তে যখন পানি জমে থাকে তখন বোঝা যায় না কোন গর্ত কত গভীর। অনেক সময় ছোট গর্ত ভেবে এগিয়ে যেতে গিয়ে বড় গর্তে রিকশার চাকা আটকে যায়। তখন গাড়ির থেকে নেমে কাদাপানির মধ্যে গিয়ে ধাক্কা দিয়ে রিকশা তোলা লাগে।

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী অবিনাস চন্দ্র সরকার বলেন, এ সড়কে পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। এ কারণে পিচ ঢালাই করার কিছুদিনের মধ্যে সড়ক আবার আগের মতো হয়ে যায়। সড়কটির পানি সরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এ কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে।