নেত্রকোনায় প্রথমবারের মতো মিলল এডিস মশা

এডিস মশা। ফাইল ছবি
এডিস মশা। ফাইল ছবি

নেত্রকোনা শহরের একটি বাড়িতে গতকাল বুধবার এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। জেলায় এই প্রথম শনাক্ত হলো ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এই মশা। সংশ্লিষ্ট বাড়ির মালিককে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এডিস মশার লার্ভা পাওয়া বাড়িটি পৌর শহরের পারলা বাসস্টেশন এলাকায় অবস্থিত। ওই বাড়ির আঙিনায় পরিত্যক্ত টায়ারে জমে থাকা পানিতে লার্ভা শনাক্ত হয়। বাড়িটির মালিক রোকন উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি।

স্থানীয় বাসিন্দা, জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জান গেছে, সারা দেশে ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে নেত্রকোনায় বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে এডিস মশার খোঁজে ১৩ আগস্ট থেকে একটি দল মাঠে নেমেছে। সিভিল সার্জন মো. তাজুল ইসলাম ওই দলের আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন। তাঁর কার্যালয়ের সহকারী কীটতত্ত্ববিদ মো. মঞ্জুরুল হক দলটির সদস্যসচিব। নয় সদস্যের দলটি শহরের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, বাসাবাড়ি, স্থাপনা, ডোবা-নর্দমা থেকে মশার লার্ভা সংগ্রহ করছে। গতকাল বেলা পৌনে তিনটার দিকে দলটি পৌর শহরের পারলা ঢাকা বাসস্টেশন এলাকায় যায়। এ সময় ওই এলাকার বাসিন্দা রোকন উদ্দিনের বাড়ির আঙিনায় পরিত্যক্ত একটি টায়ার দেখতে পায়। তাতে জমে থাকা পানি পরীক্ষা করা হয়। এতে এডিস মশার লার্ভা শনাক্ত হয়। একই সময় ওই এলাকায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের যৌথ পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলছিল। ওই অভিযানে ছিলেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার কামাল। তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাড়ির মালিক রোকন উদ্দিনকে স্থানীয় সরকার আইনে এক হাজার টাকা জরিমানা করেন।

সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের সহকারী কীটতত্ত্ববিদ মঞ্জুরুল হক বলেন, ঈদের পরদিন ১৩ আগস্ট থেকে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে তাঁরা মশার লার্ভা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে আসছেন। আজ (গতকাল) বাসস্টেশন এলাকায় ওই বাড়ির আঙিনায় পড়ে থাকা বাসের টায়ারের পানি পরীক্ষা করেন তাঁরা। এতে দেখা যায়, সেখানে এডিস মশার লার্ভা রয়েছে। পরে পরিত্যক্ত টায়ারগুলো পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সহযোগিতায় অপসারণ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়।

সিভিল সার্জন মো. তাজুল ইসলাম খান বলেন, নেত্রকোনায় এখন পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়নি। আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে যারা হাসপাতালে এসেছে, তাদের প্রত্যেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে আক্রান্ত হয়। তিনি জানান, জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে গতকাল বিকেল পর্যন্ত মোট ৮৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এ ছাড়া ৭৫০ জনকে ডেঙ্গু জ্বরের পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় ৪০ জনের ডেঙ্গু ধরা পড়েছিল। তবে ওই রোগীরা ঢাকা থেকে ডেঙ্গুর জীবাণু নিয়ে এসেছিল।

নেত্রকোনা পৌরসভার মেয়র মো. নজরুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার উদ্যোগে শহরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশকনিধন অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া প্রত্যেককেই এডিস মশা ও ডেঙ্গু জ্বর বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে।