আদালতে জবানবন্দি দিল ধর্ষণের শিকার অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটি

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হওয়া তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রংপুরের আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। বুধবার বিকেলে রংপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১-এর বিচারক স্নিগ্ধা রানী চক্রবর্তী ওই ছাত্রীর জবানবন্দি নেন।

সার্টিফিকেট ও মামলায় মেয়েটির বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ১১ বছর। সে রংপুরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। ধর্ষণের অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম তোফাজ্জল হোসেন (৪৬)। তিনি ১৬ আগস্ট আত্মহত্যা করেছেন। স্থানীয় একটি নার্সারির কেয়ারটেকার ছিলেন তিনি।

আদালতে শিশুটির জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার রংপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (ডিবি) আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণের পর মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। আদালতে বিচারকের কাছে নার্সারির কেয়ারটেকার তোফাজ্জল হোসেন ধর্ষণ করেছেন বলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে জানিয়েছে শিশুটি। এখন ডিএনএ টেস্টের জন্য তোফাজ্জলের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করতে হবে।

অন্তঃসত্ত্বা শিশুটি বর্তমানে তার মায়ের হেফাজতে একটি বেসরকারি সংস্থার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে নগরের হাজীরহাট থানায় ১৮ আগস্ট নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।

মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ জানায়, রংপুর নগরের একটি নার্সারির কেয়ারটেকার হিসেবে প্রায় তিন বছর ধরে কাজ করতেন তোফাজ্জল হোসেন। নার্সারিতে তার রান্নাবান্নার কাজ করতেন ধর্ষণের শিকার ওই মেয়েটির মা। মায়ের কাজের করার সুবাদে মেয়েটিও সেখানে যাওয়া-আসা করত। একসময় মেয়েটির শারীরিক গঠনে অনেক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। তাৎক্ষণিকভাবে মেয়েটিকে নজিরেরহাট এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কয়েক সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। এদিকে শিশুটির অন্তঃসত্ত্বার ঘটনার সঙ্গে তোফাজ্জল হোসেন জড়িত বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে ১৬ আগস্ট নার্সারিতে কীটনাশক পান করে তোফাজ্জল আত্মহত্যা করেছেন। নার্সারির পক্ষ থেকে তাঁকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী ময়নাতদন্ত ছাড়াই তোফাজ্জলের লাশ তাঁর পরিবারকে দেওয়া হয় বলে জানান নার্সারিটির মালিক জুয়েল হোসেন।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ‘ইউনিয়নের বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেন একটি নার্সারিতে চাকরি করতেন। সেখানে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছেন বলে জেনেছি। এর বেশি কিছু জানি না।’

হাজীর হাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ধর্ষণ-পরবর্তী শিশুটির অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি ডাক্তারি পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে একটি মামলা করেছেন।