রোহিঙ্গা মাঝিদের রাখাইন ঘুরিয়ে আনতে বলেছে সংসদীয় কমিটি

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে প্রথমে তাদের মাঝিদের (দলনেতা) রাখাইনের পরিস্থিতি দেখিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে বলেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটি মনে করে, এতে রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যেতে উৎসাহী হবে।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

আজ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কেউ মিয়ানমারে ফিরতে রাজি হয়নি। এর ফলে প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি। বৈঠক সূত্র জানায়, সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা রোহিঙ্গাদের দাবি পূরণ ছাড়া নিজ দেশে ফিরে না যেতে উৎসাহ দিচ্ছে। তবে মন্ত্রণালয় আশা করছে, শিগগিরই প্রত্যাবাসন শুরু করা যাবে। বৈঠকে কমিটির একাধিক সদস্য বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনেক আরাম আয়েশে আছে। যে কারণে তারা নিজ দেশে ফিরে যেতে চাইছে না।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, মানবিক কারণে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে বাংলাদেশ কোনো ‘বার্গেনিং এজেন্ট’ না। তাদের নিজ দেশে গিয়ে নিজেদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে হবে। তারা যাতে দেশে ফিরতে ভরসা পায়, সে জন্য তাদের মাঝিদের আগে মিয়ানমার ঘুরিয়ে আনতে বলেছে সংসদীয় কমিটি।

ফারুক খান বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের জানিয়েছেন, কিছুসংখ্যক এনজিও রোহিঙ্গাদের বোঝাচ্ছে যাতে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা দেশে ফিরে না যায়। কমিটি ওই এনজিওগুলোকে চিহ্নিত করতে বলেছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে কূটনৈতিক তৎপরতা ও মিয়ানমারের ওপর চাপ আরও বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি সেফ জোন সৃষ্টির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা এবং রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড সফরের ব্যবস্থা করতে মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি ফারুক খানের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার, আবদুল মজিদ খান, কাজী নাবিল আহমেদ ও নিজাম উদ্দিন জলিল বৈঠকে অংশ নেন।