পৃথক ধর্ষণের অভিযোগে বরিশালে গ্রেপ্তার ৩

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বরিশাল নগরে এক কলেজছাত্রীকে (২০) ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিওচিত্র ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অপরদিকে বুধবার রাতে নগরের সিঅ্যান্ডবি সড়কে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই দুই তরুণী বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নগরের বাসিন্দা ওই কলেজ ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করেন বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর এলাকার রায়হান হোসেন হাওলাদার (২৪)। এরপর তাঁকে ধর্ষণের ভিডিওচিত্র দেখিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালান তিনি। কিন্তু ওই ছাত্রী মনোভাব বুঝতে পেরে গত কয়েক দিন ধরে রায়হানকে এড়িয়ে চলেন। এতে রায়হান গত মঙ্গলবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ষণের ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে দেন। বিষয়টি ওই ছাত্রীর পরিবার জানতে পেরে মঙ্গলবার রাতেই বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ করে। ওই রাতেই রায়হানকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ। পরে বৃহস্পতিবার ‘ভুক্তভোগীর’ নানা রায়হানকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ও পর্নোগ্রাফি আইনের পৃথক ধারায় দুটি মামলা করেন।

অপরদিকে নগরের সিঅ্যান্ডবি সড়কের একটি বাড়িতে ‘আশ্রয় নেওয়া’ এক তরুণীকে (২৫) বুধবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ঘরের কর্তা জুয়েল মল্লিক বৃহস্পতিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ঘটনার দিন বুধবার রাতে পুলিশ, ফরিদ জমাদ্দার (২২) ও আল আমিন (২৪) নামের দুজনকে আটক করে।

মামলায় জুয়েল নিজকে ওই তরুণীর আশ্রয়দাতা বলে উল্লেখ করেছেন। জুয়েল স্থানীয় একটি কলেজের নৈশ প্রহরীর চাকরি করেন।

মামলার বাদী জুয়েল মল্লিকের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, পাঁচ দিন আগে নগরীর ফলপট্টি এলাকায় ঢাকা থেকে আসা বাকেরগঞ্জের ওই তরুণীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর ওই তরুণী তাঁকে (লাকি) বোন ডেকে তাঁর বাড়িতে কয়েক দিনের জন্য আশ্রয় চান। বরিশালে কেউ পরিচিত না থাকায় ওই তরুণীকে নিজের বাসায় আশ্রয় দেন বলে জানান লাকি।

জুয়েল মল্লিকের দাবি, ওই তরুণী গত পাঁচ দিন ধরে তাঁদের ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিলেন। বুধবার রাত ১১ টার দিকে ইসলামপাড়া এলাকার বাসিন্দা বখাটে জুয়েল ও তাঁর সহযোগীরা ওই বাসায় এসে তরুণীকে আপত্তিকর প্রস্তাব দেন। এতে প্রতিবাদ করায় তাঁরা তাঁকে (জুয়েল) মারধর করে এবং একটি কক্ষে আটকে তরুণীর সঙ্গে তাঁর আপত্তিকর দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করেন। জুয়েলের অভিযোগ, আপত্তিকর ছবি তোলা শেষে আসামিরা তরুণীকে ধর্ষণ করেন।

কোতোয়ালি মডেল থানা-পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতে খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ জুয়েলের বাড়ি যায় পুলিশ। এ সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় ওই বখাটে দলের সদস্য ফরিদকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে আটক করা হয় আল আমিনকে।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ওই দুই তরুণীকে হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।