টেকনাফে যুবলীগ নেতা হত্যার পেছনে রোহিঙ্গা 'সন্ত্রাসীরা'

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে মোহাম্মদ ওমর ফারুক (৩০) নামের যুবলীগের এক নেতা নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোরা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহত ওমর ফারুকের পরিবার ও পুলিশ বলছে, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ও ডাকাত দল এই হত্যায় জড়িত। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পুলিশের তালিকাভুক্ত ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

নিহত ফারুক উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি হ্নীলার জাদিমোরার বাসিন্দা মোহাম্মদ মোনাফ কোম্পানির ছেলে। ওমর ফারুক জাদিমোরা এম আর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদেরও সভাপতি ছিলেন।

ঘটনার প্রতিবাদে আজ শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে জাদিমোরার টেকনাফ-কক্সবাজার আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে রোহিঙ্গা ডাকাত সরদার মোহাম্মদ সেলিমের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী ওমর ফারুকের বাড়ির সামনে থেকে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে তুলে নেন। একপর্যায়ে তাঁকে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের পশ্চিম পাশের পাহাড়ের কাছে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেন।

গুলির শব্দ শোনার পর ফারুকের ভাই আমির হামজা, মো. উসমানসহ আত্মীয়স্বজনেরা ঘটনাস্থলের দিকে যেতে চান। সন্ত্রাসীরা তাঁদের বাধা দেন। গুলিবিদ্ধ ফারুকের মরদেহ আনতেও বাধা দেন তাঁরা।

খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। তারা কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সন্ত্রাসীরা পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।

নিহত ওমর ফারুকের ভাই আমির হামজা বলেন, ‘রাখাইনে রোহিঙ্গা নিপীড়ন শুরু হলে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পাশে ছিলাম আমরা। অন্যদের মতো আমাদের পরিবারও তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে। রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করে ওমর ফারুক। অথচ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা তাকেই গুলি করে হত্যা করেছে।’

নিহত ফারুকের পরিবারের অভিযোগ, মামলা করলে তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন সন্ত্রাসীরা।

নিহত ফারুকের বাবা মোহাম্মদ মোনাফ বলেন, ‘রোহিঙ্গা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তাদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।’

টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এ বি এম এস দোহা প্রথম আলোকে বলেন, হত্যার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসীরা লাশ ফেলে পালিয়ে যান। পরে লাশটি উদ্ধার করা হয়। রাতেই ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

এ বি এম এস দোহা বলেন, কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটল, তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ও ডাকাত দল এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পুলিশের তালিকাভুক্ত ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তাঁদের গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চলছে।