রোহিঙ্গাদের আর বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াতে পারব না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ফাইল ছবি
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ফাইল ছবি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা সত্ত্বেও আমরা রোহিঙ্গাদের ফেরাতে পারিনি। তবে রোহিঙ্গাদের ফিরে যেতেই হবে। তাদের আর বসিয়ে বসিয়ে আমরা খাওয়াতে পারব না।’

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেট সফরে এসে সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেছেন।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন শুরুর কথা ছিল। কিন্তু প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত রোহিঙ্গাদের কেউই তাঁদের শর্ত পূরণ ছাড়া ফিরে যেতে রাজি হননি। এ নিয়ে গতকালই ক্ষোভের কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি এ ঘটনাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন। আজও ওই প্রত্যাবাসন নিয়ে কথা বলেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব হওয়ায় তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে রাজি হয়েছে। আগে যেসব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলেছিল, এখন তারাও প্রত্যাবর্তনের পক্ষে কথা বলছে। প্রয়োজনে আরও চাপ সৃষ্টি করা হবে।’

এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা তাদের আগেই প্রস্তাব দিয়েছিলাম রোহিঙ্গাদের ১০০ জন নেতাকে সেখানে নিয়ে যেতে। তাদের প্রত্যাবর্তনের জন্য সেখানে কী কী করা হয়েছে, সেগুলো দেখে এসে তারা অন্যদের বোঝাবে। রোহিঙ্গাদের জন্য সে দেশে চীন ও ভারত বাড়ি বানিয়ে দিয়েছে। সেগুলো দেখে এসে তারা যখন অন্য রোহিঙ্গাদের বলত, তখন তারা আশ্বস্ত হতো। প্রত্যাবর্তনে রাজি হতো। কিন্তু মিয়ানমার সেটা করেনি। তাই প্রত্যাবর্তনের ব্যর্থতার দায় তাদেরই।’

রোহিঙ্গাদের দাবি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যেসব দাবি জানাচ্ছে, সেটা মানতে আমরা বাধ্য নই। এটা তাদের দেশে গিয়ে অর্জন করতে হবে।’ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে রাজি করাতে না পারা কূটনৈতিক ব্যর্থতা, বিএনপির এমন মন্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের ফেরাতে পারিনি, এটা সত্য। তবে এদের ফেরানো হবে। কবে যাবে, সেটা হয়তো এখন বলা যাচ্ছে না। বিএনপির অন্য কোনো ভালো আইডিয়া থাকলে আমরা তাদের ওয়েলকাম জানাব।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মন্ত্রীর সঙ্গে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের বাইশটিলা এলাকায় মাছের পোনা অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।