দুই মাসেও জানা যায়নি দম্পতি খুনের রহস্য

হিমা আক্তার, মো. আবুবক্কর
হিমা আক্তার, মো. আবুবক্কর

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে দিনদুপুরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নবদম্পতির লাশ হওয়ার রহস্য দুই মাসেও উদ্‌ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। এ অবস্থায় হত্যা মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে হস্তান্তর করেছে করিমগঞ্জ থানা-পুলিশ। এত দিনেও ঘটনার কুলকিনারা পর্যন্ত করতে না পারায় হতাশ মামলার বাদীপক্ষ।

এদিকে জেলায় এক দিনে চার খুনসহ ঈদের পরে এক সপ্তাহে নয় খুনের ঘটনায় জনমনে দেখা দিয়েছে উৎকণ্ঠা আর আতঙ্ক।

গত ২১ জুন করিমগঞ্জের সতেরদড়িয়া গ্রামের রিকশাচালক মো. আবুবক্কর (২৫) ও তাঁর স্ত্রী হিমা আক্তার (২০) বেলা পৌনে তিনটার দিকে বেড়ানোর উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। যাওয়ার পথে ঘণ্টাখানেক পর বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নের দক্ষিণ চানপুর এলাকায় নির্জন জায়গায় একটি মৎস্য খামারের পাড়ে তাঁদের গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়।

ঘটনার পরদিন নিহত হিমার বাবা মাসুদ মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে করিমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। তবে ঘটনার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও ঘটনার ক্লু খুঁজে বের করতে পারেনি পুলিশ।

এ বিষয়ে করিমগঞ্জ থানার ওসি মমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন। দুই পরিবারের সদস্যসহ এলাকার অসংখ্য মানুষকে বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছে। হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে শুধু একটি রক্তামাখা পাতলা ব্লেড ও একটি কোরআন শরিফ পাওয়া গিয়েছিল। তখন এটি হত্যা না আত্মহত্যা অথবা স্বামী বা স্ত্রীর মধ্যে কে আগে মারা গেছে, কিছুই বোঝা না গেলেও পরে জানা গেছে, এটি একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড ছিল এবং স্বামী আবুবক্করকে আগে হত্যার পর স্ত্রী হিমাকে হত্যা করা হয়েছে। ওসি জানান, গত বৃহস্পতিবার মামলার বাদী মাসুদ মিয়া তাঁর সঙ্গে থানায় সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন। গতকাল শুক্রবার মামলাটি পিবিআইর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

দিনের বেলায় জোড়া খুনের ঘটনায় উদ্বেগ–উৎকণ্ঠায় আছেন দুই পরিবারের সদস্য ও তাঁদের স্বজনেরা। দুই মাসে হত্যাকাণ্ডের রহস্যসহ একজন আসামিও গ্রেপ্তার না করতে পারায় পুলিশের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহত দম্পতির স্বজনেরা।

কিশোরগঞ্জে একের পর এক খুন, ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধের ঘটনায় জেলাবাসীর মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বেড়েই চলেছে। গত বুধবার এক দিনে মাত্র সাত ঘণ্টার ব্যবধানে সদর, পাকুন্দিয়া, করিমগঞ্জ ও মিঠামইনে নারীসহ চার খুন এবং ঈদের পর এক সপ্তাহে বাজিতপুর, ইটনা, ভৈরব ও অষ্টগ্রামে নয়টি খুনের ঘটনা ঘটেছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, অপরাধীরা একের পর এক ঘটনা ঘটাচ্ছে। তবে প্রতিটি ঘটনায় পুলিশ মামলা নিচ্ছে এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তারসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।