বিজ্ঞাপন দিয়ে বিএনপি নেতার পদত্যাগ, আবার ফেরার আগ্রহ

মোহাম্মদ বাবুল হক
মোহাম্মদ বাবুল হক

ঘোষণা দিয়ে দল থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন পাহাড়তলী থানার বিএনপির সভাপতি মো. বাবুল হক। সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা বিজ্ঞাপন আকারে স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল ১০ ফেব্রুয়ারি। তিনি আবার দলে ফেরার জন্য আগ্রহ দেখানোয় দলীয় নেতা–কর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।

দলীয় সূত্র জানায়, গত ১০ ফেব্রুয়ারি বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন মো. বাবুল হক। তাঁর ঘোষণা বিজ্ঞাপন আকারে চট্টগ্রামের দুটি দৈনিকে প্রকাশিত হয়। সম্প্রতি বিএনপি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় তিনি আবার বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

তিন এখন কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ার জন্য বিএনপিতে স্বপদে আসতে নগর বিএনপির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। যদিও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকার দলীয় প্রার্থীর মতামত ছাড়া নগর বিএনপির স্বপদে পুনর্বহাল হওয়ার সুযোগ নেই।

দলে ফিরতে আগ্রহী বলে মো. বাবুল হক প্রথম আলোকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে। ওই পরিস্থিতিতে দলে না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তবে দলের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। আমার পরবর্তী পদক্ষেপ আপনাদের জানাব।’

চট্টগ্রাম–১০ আসনের আওতাধীন এলাকা পাহাড়তলী থানা। এই আসনে বিগত দুটি জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। বাবুল হকের দলে ফিরে আসার আগ্রহের খবরে নোমানের অনুসারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

নোমানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত নগর বিএনপির সহসভাপতি শামছুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, যেকোনো রাজনৈতিক নেতা–কর্মীর জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন হচ্ছে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার মতো। বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হলেও তাঁকে বিশেষ বিবেচনায় পদোন্নতি দেওয়া যায়।

তিনি বলেন, যে ব্যক্তি থানার সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকেও নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না, দায়িত্বকে অবহেলা করেছেন অথবা বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নেননি তাঁকে কোনোভাবেই বিএনপিতে থানার সভাপতি পদে পুনর্বহালের সুযোগ নেই। যেহেতু তিনি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।

শামছুল আলম আরও বলেন, বিএনপিকে জনসম্মুখে হেয় করেছেন বাবুল হক। তাঁর উচিত হবে পত্রিকায় আবার বিজ্ঞাপন দিয়ে বিএনপি নেতা–কর্মীদের কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং নতুন করে দলের প্রাথমিক সদস্য পদের জন্য আবেদন করা। থানা বিএনপির সভাপতি পদে তাঁকে পুনর্বহাল করার কোনো সুযোগ নেই।

তবে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম মনে করেন, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা গঠনতন্ত্রে নেই। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বাবুল হকের উচিত ছিল পদত্যাগপত্র দেওয়া, যা তিনি করেননি। ফলে পত্রিকার বিজ্ঞাপন দিয়ে পদত্যাগ করা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিবেচ্য বিষয় নয়।

আবুল হাশেম আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে ও পরে দলীয় নেতা–কর্মীরা বাড়িঘরে থাকতে পারেনি। ওই পরিস্থিতিতে অনেকে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে অনেক ধরনের কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বাবুল হক সেই রকম কিছু করতে পারেন বলে আমাদের ধারণা।’