দায়ের কোপে ছেলে নিহত, বাবাসহ আটক ৩

শেরপুরের সদর উপজেলায় জমিসংক্রান্ত দ্বন্দ্ব ও পারিবারিক কলহের জেরে বাবার দায়ের কোপে ছেলে নিহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়েছে পুলিশ। উপজেলার ধাতিয়াপাড়া গ্রামে আজ শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম মো. শফিকুল ইসলাম (৪০)। তিনি সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়নের ধাতিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কৃষিকাজ করতেন। শফিকুলের বাবার নাম মো. মুসলিম উদ্দিন (৬০)। তিনিই শফিকুল হত্যা ঘটনায় অভিযুক্ত। মুসলিম উদ্দিনের প্রথম স্ত্রী মৃত সবুজা বেগমের ছেলে ছিলেন শফিকুল। মুসলিম একজন অবসরপ্রাপ্ত কারারক্ষী।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ মুসলিম উদ্দিন, তাঁর তৃতীয় স্ত্রী মলেদা বেগম ও মেয়ে মেরি আক্তারকে আটক করেছেন।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে টাকাপয়সা ও জমিজমা নিয়ে বাবা মুসলিম উদ্দিনের সঙ্গে ছেলে শফিকুলের দ্বন্দ্ব ও পারিবারিক কলহ চলছিল। এর জেরে আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে শফিকুল ধাতিয়াপাড়া গ্রামের ধানখেতে যান। এ সময় ওই জায়গায় বাবা মুসলিম উদ্দিনের সঙ্গে শফিকুলের বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে মুসলিম তাঁর হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে ছেলে শফিকুলের ওপর আক্রমণ করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক আঘাত করেন। এতে শফিকুল ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ ঘটনার পর মুসলিম পালিয়ে যান। তবে সদর থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাঁকে আটক করে।

নিহত শফিকুলের স্ত্রী রোজিনা বেগম বলেন, টাকাপয়সা ও জমিজমা থেকে বঞ্চিত করার জন্যই সৎশাশুড়ি মলেদা বেগম ও ননদ মেরি আক্তারের প্ররোচনায় শ্বশুর মুসলিম তাঁর স্বামী শফিকুলকে হত্যা করেছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে থানা হেফাজতে আটক শফিকুলের সৎমা মলেদা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে তাঁর স্বামী মুসলিম বা তাঁরা জড়িত নন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা হবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে প্রধান সন্দেহভাজন শফিকুলের বাবা মুসলিম উদ্দিন, সৎমা মলেদা বেগম ও সৎবোন মেরি আক্তারকে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধারে চেষ্টা করছে।