ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ

বাঁশখালীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শেখেরখীল ফাঁড়ির মুখ ঘাটে।  প্রথম আলো
বাঁশখালীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শেখেরখীল ফাঁড়ির মুখ ঘাটে। প্রথম আলো

তখন বিকেল। ঘাটে এসে থামছে একের পর এক ইঞ্জিনচালিত নৌকা। প্রতিটি নৌকাই রুপালি ইলিশে ভর্তি। নৌকা থেকে ইলিশ নামানোর পরই খাঁচা ভর্তি করে তোলা হচ্ছে ট্রাক-পিকআপে। এরপর চলে যাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। গত শুক্রবার বিকেলের এ চিত্র চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বড় মাছের ঘাট শেখেরখীল ফাঁড়িরমুখ এলাকার।

প্রতিদিন এই ঘাটে ভেড়ে বঙ্গোপসাগর থেকে ইলিশ ধরে আসা জেলেদের নৌকাগুলো। উপজেলা মৎস্য দপ্তরের ধারণা অনুযায়ী চলতি আগস্ট মাসে প্রায় ৯০ মেট্রিক টন ইলিশ বাঁশখালীর জেলেদের জালে ধরা পড়বে। চলতি বছরের ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকার পর এক মাস ধরে মাছ ধরা চলছে।

শেখেরখীলের ফাঁড়িরমুখে দেখা গেছে, পাঁচটি নৌকা থেকে নামানো হচ্ছে ইলিশ। ব্যস্ত সময় কাটছে শ্রমিকদের। কথা বলার সময় নেই কারোর। নৌকা থেকে নামানোর পর আকারভেদে ইলিশ আলাদা করে খাঁচা ভর্তি করা হচ্ছে। এরপর পচন ঠেকাতে দেওয়া হচ্ছে বরফ।

বাঁশখালী বোট মালিক কল্যাণ সমিতির দেওয়া তথ্য অনুসারে বাঁশখালীর প্রায় দুই হাজার নৌকা সাগরে মাছ ধরতে যায়। শেখেরখীলের ফাঁড়িরমুখ এবং চাম্বলের বাংলাবাজার ঘাটে মূলত নৌকা থেকে মাছ নামানো হয়। সাগর থেকে এসব মাছ ঘাটে আনতে জলকদর খাল ব্যবহার করা হয়। একটি নৌকায় পাঁচ থেকে সাত হাজারটি ইলিশ থাকছে।

ফাঁড়িরমুখ এলাকার মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ঈসমাইল বলেন, গভীর সাগরে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ছে। বড় নৌকাগুলো গভীর সাগরে অবস্থান করে থাকে। নির্দিষ্ট সময় পরপর ছোট নৌকাগুলো সাগরে গিয়ে বড় নৌকা থেকে মাছগুলো তীরে নিয়ে আসে। ইলিশের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে লইট্যা মাছও জালে ধরা পড়ছে। ট্রাকে করে এসব ইলিশ চট্টগ্রাম ও ঢাকার বড় বাজারগুলোতে সরবরাহ করা হয়। এক কেজি ওজনের ইলিশ ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাঁশখালী মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, বাঁশখালীতে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ছে। চলতি ১ থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ৪৫ মেট্রিক টন ইলিশ ধরা পড়েছে। বাকি ১৫ দিনেও একই রকম ইলিশ ধরা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় মা ইলিশ ডিম ছাড়ার সুযোগ পেয়েছে। ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বাঁশখালীর জেলেদের জালে বেশি ধরা পড়ছে। তিন কেজি ওজনের ইলিশও বাঁশখালীর জেলেদের জালে ধরা পড়েছে।

তিনি আরও বলেন, পদ্মার ইলিশ খাটো আর সাগরের ইলিশ সাধারণত লম্বাটে হয়। মিঠাপানি হওয়ায় পদ্মার ইলিশ সাগরের ইলিশের চেয়ে একটু বেশি স্বাদের হয়। তবে সাগরের ইলিশও বেশ সুস্বাদু।