বিদ্যালয়ের মাঠ যেন মশার প্রজননস্থল

নাওজোড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও স্থাপনায় জমে আছে পানি। গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় তোলা।  প্রথম আলো
নাওজোড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও স্থাপনায় জমে আছে পানি। গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় তোলা। প্রথম আলো

পানি জমে থাকতে থাকতে বিদ্যালয় মাঠের স্যাঁতসেঁতে অবস্থা। মাঠে খেলাধুলা বন্ধ আছে কয়েক মাস ধরে। ফলে জমে থাকা পানিতে মশা জন্ম নিচ্ছে। এই চিত্র গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নাওজোড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের নাওজোড় এলাকায় ১৯১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়টি। প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থীর এই বিদ্যালয়ে নিয়মিত শিক্ষক আটজন। বর্তমানে বিদ্যালয়ের উত্তর পাশে একটি একতলা ভবন রয়েছে। সেখানে কক্ষ রয়েছে চারটি। এর একটিতে প্রধান শিক্ষক, একটিতে সহকারী শিক্ষক এবং অন্য দুটিতে ক্লাস হচ্ছে।

দক্ষিণ পাশের টিনশেড ঘরের তিনটি কক্ষে বর্ষা মৌসুমে পানি ঢোকে। ফলে সব সময় সেখানে ক্লাস করা যায় না। আর পশ্চিম পাশে একটি ভবন পড়ে আছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের বারান্দায় জমে আছে পানি। খেলার মাঠেও পানি জমে স্যাঁতসেঁতে অবস্থা। জমে থাকা পানিতে মশার উপদ্রব। আশপাশে নোংরা পরিবেশ। টয়লেটের সামনে-পেছনে বিদ্যালয়ের সব আবর্জনা ফেলা হয়। সামনের রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করা গেলেও স্কুলের মাঠে জমে থাকা পানির কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।

বিদ্যালয়ের দুরবস্থার কথা উল্লেখ করে গত ২৮ এপ্রিল প্রধান শিক্ষক কহিনূর বানু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে একটি আবেদন করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, বিদ্যালয় ভবনটির আশপাশ সাত-আট ফুট উঁচু হওয়ায় পাশের বাড়িঘর, কলকারখানা ও বাজারের ময়লা পানি সারা বছর মাঠে এসে জমে। ফলে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারে না, দৈনিক সমাবেশ হয় না। সামান্য বৃষ্টিতে টিনশেড ভবনের মেঝেতে পানি ঢোকে। এতে শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ থাকে। আর বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি ফেলার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলাম বলে, ‘বিদ্যালয়ের মাঠে সারা বছর পানি জমে থাকায় আমরা খেলতে পারি না। এখানে মাঠে জমে থাকা পানিতে মশার উপদ্রব বেড়েছে। ক্লাসরুমেও মশার যন্ত্রণা সইতে হচ্ছে।’

প্রধান শিক্ষক বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সচেতন করা হয়েছে। ঈদের আগে মা সমাবেশের আয়োজন করা হয়, সেখানে এডিস মশা নিধন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে সিটি করপোরেশন থেকে মশার কোনো ওষুধ ছিটানো হয়নি। তাঁরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে ক্লাসরুমে ওষুধ ছিটিয়েছেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল হক বলেন, জেলায় ৭৭৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সব বিদ্যালয়কে ঈদের আগেই বলা হয়েছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে। তাঁরা বিষয়টি নজরদারির মধ্যে রেখেছেন।