চট্টগ্রামে আমীর খসরুসহ বিএনপি-জামায়াতের ৪৫৩ নেতা-কর্মীর বিচার শুরু

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় চট্টগ্রামে বিএনপি-জামায়াতের ৪৫৩ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়েছে। সাড়ে পাঁচ বছর আগে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলাটি হয়।

আসামিরা হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম, দলের যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সহসভাপতি মো. এনামুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য শামসুল আলম এবং জামায়াতের সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরী। বাকিরা সবাই বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মী।

আজ রোববার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামের বিচারক মোহাম্মদ আবদুল হালীমের আদালতে শুনানি শেষে এই অভিযোগ গঠন করা হয়। তবে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে (২০১৫ সাল) চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি-সংলগ্ন নাসিমন ভবনের সামনে সমাবেশ ডেকেছিল ২০-দলীয় জোট। ওই দিন সভা চলাকালে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি হয় নেতা-কর্মীদের। একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন নেতা-কর্মীরা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আসলাম চৌধুরীসহ ৩০২ জনকে গ্রেপ্তার করে। আসামিদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী এখনো কারাগারে। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলা, বিস্ফোরক আইন ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ধারায় একটি মামলা করে নগরের কোতোয়ালি থানায়।

তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৪ জুলাই চট্টগ্রাম আদালতে পুলিশের ওপর হামলা, বিস্ফোরক আইন ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনের তিনটি ধারায় পৃথক তিনটি অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ৯ সেপ্টেম্বর আদালত অভিযোগপত্রগুলো গ্রহণ করেন। কয়েক দফা শুনানি পেছানোর পর আদালত আজ সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন। বাকি দুটি মামলায় শুনানির তারিখ পড়েনি।

চট্টগ্রাম আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় আজ সকাল থেকে জড়ো হতে থাকেন আসামি বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। ট্রাইব্যুনালে আসামির কাঠগড়ায় আসামি পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় এজলাস ও বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় আসামিদের। শুনানিকালে আসামিদের পক্ষে প্রায় অর্ধশত আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

শুনানিকালে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের হয়রানি, আন্দোলন ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলা হয়েছিল। ঘটনার দিন পুলিশ ৬০০টি গুলি করেছিল। আসামিরা কেউ গুলি চালায়নি। তাই এটি সন্ত্রাসবিরোধী আইনে পড়ে না। আদালতকে বলা হয়, তাঁরা সম্পূর্ণ নির্দোষ। হয়রানির জন্য এই মামলা। আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।

ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি মনোরঞ্জন দাশ বলেন, আসামিরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছেন। দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য তাঁরা পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালিয়েছেন। তাঁরা গুলিও চালিয়েছেন।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামিদের অভিযোগ পড়ে শোনান। পরে ৪৫৩ আসামির বিরুদ্ধে এই মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। তবে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য এখনো তারিখ পড়েনি।