রূপাকে ধর্ষণের পর হত্যার ২ বছর, মা শুধু বিচার চান

ধর্ষণের পর হত্যার শিকার জাকিয়া সুলতানা রূপার হত্যাকারীদের বিচার জীবদ্দশায় দেখে যেতে চান তাঁর মা ও পরিবারের সদস্যরা। আজ রোববার সকালে তাড়াশ প্রেসক্লাবের সামনে বুকে কালো ব্যাচ ধারণ করে দ্রুত বিচারের দাবিতে তাঁরা মানববন্ধন করেন। রূপাকে ধর্ষণের পর হত্যার দুই বছর হলো আজ।

রূপার মা হাসনাহেনা বেগম (৫৭) বলেন, ‘মা আর অসহায় ভাই-বোনদের জন্য সব সময় কিছু করার প্রবল ইচ্ছা প্রকাশ করত রূপা। স্বপ্ন দেখত উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভালো চাকরি করবে। এখন আমাদের একটাই দাবি—দ্রুত বিচার হোক, রায় কার্যকর হোক।’

মানববন্ধনে দাঁড়ানোর আগে প্রেসক্লাবের হলরুমে বসে ব্যানারে মেয়ের ছবি দেখে কাঁদতে থাকেন রূপার মা। বিলাপ করতে করতে রূপার ছবিতে বারবার চুমো খাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।

রূপার বড় ভাই হাফিজুর রহমান বলেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন। এরপর গত ১৯ মাসেও চাঞ্চল্যকর এ মামলায় শুনানি শুরু হয়নি। নিম্ন আদালতে দ্রুততম সময়ে মামলার রায় ঘোষণায় আমরা সন্তুষ্ট হয়েছিলাম। তবে উচ্চ আদালতে আসামিপক্ষের আপিলের পর মামলাটি গত দেড় বছর ঝুলে থাকায় হতাশ হয়ে আমরা পড়েছি।’

হাফিজুর রহমান আরও বলেন, ক্ষতিপূরণ হিসেবে ছোঁয়া পরিবহনের বাসটি পরিবারকে দেওয়ার যে আদেশ আদালত দিয়েছেন, তাও কার্যকর করা হয়নি। বিচারের সর্বশেষ পর্যায়ে যেতে কত দিন সময় লাগবে জানা নেই। তত দিনে হয়তো বাসটি ভাঙারি হিসেবে বিক্রি করতে হবে। এতে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আশাও ক্ষীণ।

রূপার মায়ের সঙ্গে মানববন্ধনে আরও অংশ নেয় রূপার ছোট ভাই উজ্জ্বল হোসেন ও তাঁর স্ত্রী টুম্পা খাতুন।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাতে মধুপুর বনাঞ্চলের রাস্তার ধার থেকে রূপার লাশ উদ্ধার করে মধুপুর থানা-পুলিশ। পরিচয় না মেলায় ২৬ আগস্ট ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। এরপর ২৭ আগস্ট নিহতের বড় ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় রক্তাক্ত লাশের ছবি শনাক্ত করেন যে অজ্ঞাত তরুণী তাঁর ছোট বোন রূপা। ৩১ আগস্ট রূপার মরদেহ কবর থেকে তুলে তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওই রাতেই তাঁর লাশ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় গ্রামের বাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয়। ময়নাতদন্তে জানা যায়, ধর্ষণের পর রূপাকে হত্যা করে বনে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা।