শরীয়তপুরে ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল কলেজছাত্রের

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মো. দাদন লস্কর (২৫) নামের এক কলেজছাত্র। তিনি গতকাল রোববার রাতে মারা যান।

এ নিয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শরীয়তপুরে তিন নারী ও এক পুরুষের মৃত্যু হলো। গত ৩০ জুলাই জাজিরার স্কুলশিক্ষিকা বর্ষা আক্তার (২৮) ঢাকার সাইনবোর্ড এলাকার প্রএ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ৫ আগস্ট ভেদরগঞ্জের ইতালিপ্রবাসী হাফসা লিপি (৩০) ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে এবং ২১ আগস্ট ডামুড্যার গৃহবধূ সুরাইয়া আক্তার (৩৭) নিজ বাড়িতে মারা গেছেন।

দাদন উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের মাছুয়াখা‌লি গ্রামের জামাল হো‌সেন লস্করের ছে‌লে। প‌রিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দাদন লস্কররা তিন ভাই, এক বোন। দাদন পরিবারের বড় ছে‌লে। তি‌নি গোসাইরহাট সরকারি সামসুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় ক‌লে‌জের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তি‌নি রাজধানীর বনানীর একটি হো‌টে‌লে ম্যা‌নেজার হি‌সে‌বে চাক‌রি কর‌তেন।

গত ১৫ আগস্ট দাদন জ্বর অনুভব করেন। জ্বর ক্রম‌শ বাড়‌তে থাক‌লে ২২ আগস্ট শরীয়তপু‌রে গ্রামের বা‌ড়ি চ‌লে যান তিনি। প‌রের দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় প‌রিবারের সদস্যরা দাদন‌কে গোসাইরহাট উপ‌জেলা স্বাস্থ্য কম‌প্লে‌ক্সে নি‌য়ে যায়। সেখানে রক্ত পরীক্ষা করলে ডেঙ্গু জ্বর শনাক্ত হয়। ওই হাসপাতালে ভর্তি হ‌য়ে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। গতকাল রোববার বিকেলে দাদ‌নের অবস্থার অবন‌তি হ‌লে কর্তব্যরত চি‌কিৎসক রাতে তাঁকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠান। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নি‌য়ে যাওয়ার পথে রাত সাড়ে আটটার দিকে তিনি মারা যান।

‌গোসাইরহাট উপ‌জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবা‌সিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ইব্রা‌হিম খ‌লিল ব‌লেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত দাদন গোসাইরহাট স্বাস্থ্য কম‌প্লে‌ক্সে ভর্তি ছিলেন। রোববার অবস্থার অবন‌তি হ‌লে তাঁকে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

দাদ‌ন লস্করের বাবা জামাল হো‌সেন লস্কর বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। আমি কৃষিকাজ ক‌রে সংসার চালাই। সংসা‌রে অভাব দে‌খে ‌বড় ছে‌লে দাদন ঢাকা‌র একটি হো‌টে‌লে ম্যানাজারি করত। বুঝতে পারিনি সামান্য জ্বরে ছেলেটা আমাদের ছেড়ে চলে যাবে।’

শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন মো. খলিলুর রহমান বলেন, ঢাকা থেকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শরীয়তপু‌রে এসে‌ছিলেন লস্কর। জেলায় এ পর্যন্ত ৩৮১ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হ‌য়ে‌ছে। জেলার ডেঙ্গু পরিস্থিতি বর্তমানে অনেকটা ভা‌লো ম‌নে হচ্ছে। আগের থে‌কে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কম‌ছে।