রাস্তায় নামলেন ধর্ষণের শিকার নারীদের স্বজন

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন থেকে গত সাত মাসে নোয়াখালীতে সংঘটিত ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মাঠে নেমেছেন নির্যাতিত ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। যার অংশ হিসেবে গতকাল রোববার প্রেসক্লাবের সামনে তাঁরা মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন। 

সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় আধঘণ্টা স্থায়ী এ কর্মসূচিতে সুবর্ণচর ও কবিরহাট উপজেলায় পাঁচটি ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনার শিকার নারীদের পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। এ সময় তাঁদের কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। মানববন্ধন ও সমাবেশে নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন।

মানববন্ধনে সুবর্ণচরে গত ৩০ ডিসেম্বর রাতে ধর্ষণের শিকার চার সন্তানের মা, ১৮ জানুয়ারি দিবাগত রাতে কবিরহাট উপজেলায় ধর্ষণের শিকার নারী, ৩১ মার্চ রাতে সুবর্ণচরের ধর্ষণের শিকার ছয় সন্তানের মা এই মানববন্ধনে অংশ নেন। তাঁদের সঙ্গে এসেছিলেন আত্মীয়স্বজন ও এলাকার লোকজন। 

বক্তারা অভিযোগ করেন, দু–একটি ঘটনা ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আদালতে মামলার অভিযোগপত্র জমা দেয়নি পুলিশ। অনেক আসামি রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ফলে আসামি ও তাদের লোকজন মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। আবার অনেক আসামি এরই মধ্যে জামিনেও বেরিয়ে গেছে। এ অবস্থায় তাঁদের মধ্যে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন বক্তারা।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে সুবর্ণচরে ধর্ষণের শিকার চার সন্তানের মা বলেন, তাঁর ওপর নির্যাতনের ঘটনায় তিনি এখনো বিচার পাননি। অভিযুক্ত এক আসামি ইতিমধ্যে আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। আসামিরা তাঁকে সপরিবারে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। 

১৮ জানুয়ারি দিবাগত রাতে কবিরহাটে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ বলেন, ‘আমার স্বামীকে মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠিয়ে যুবলীগ নেতা জাকির হোসেনসহ যাঁরা আমার ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন, তঁারা সবাই জামিন পেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের ভয়ে আমি গ্রামের বাড়ি ছেড়ে শহরে এসে থাকছি।’

প্রসঙ্গত:  ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন থেকে শুরু করে গত জুন মাস পর্যন্ত নোয়াখালীতে ৬৩টি ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সুবর্ণচরের দুটি এবং কবিরহাট উপজেলার একটি গণধর্ষণের ঘটনা ব্যাপক আলোচনায় আসে। এসব মামলার কোনটিরই এখনো বিচারকাজ শুরু হয়। কিন্তু তার আগেই আসামিরা জামিনে বেরিয়ে আসছে।