মঠবাড়িয়ায় ইউপি সদস্যকে হত্যায় সাতজনের যাবজ্জীবন

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার পশ্চিম ফুলঝুড়ি গ্রামে শাহ আলম (৪৮) নামের এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যকে হত্যার দায়ে সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাঁদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আজ সোমবার দুপুরে পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. আবদুল মান্নান এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির হলেন উপজেলার আঙ্গুলকাটা গ্রামের আলম মোল্লা (৩৪), একই উপজেলার বাদুরা গ্রামের শাহাদাৎ হোসেন পঞ্চায়েত (৩৪), পাঠাকাটা গ্রামের ইদ্রিস হাওলাদার (৩৯) ও ইলিয়াস হাওলাদার (৩৪), বকসির ঘটিচোরা গ্রামের মো. দেলোয়ার হোসেন (২৯), ধানীসাফা গ্রামের আবদুর রহিম (৩৪) ও সাফা গ্রামের মো. বাচ্চু তালুকদার (৩৪)।

নিহত শাহ আলম ধানীসাফা ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২৬ জুলাই রাত দুইটার দিকে পশ্চিম ফুলঝুড়ি গ্রামের ফিরোজ ফরাজীর বাড়িতে একদল ডাকাত হানা দেয়। এ সময় ওই বাড়িতে ডাকাত ডাকাত চিৎকার শুনে প্রতিবেশী শাহ আলম ছুটে যান। ফিরোজের বাড়ির সামনের সড়কে পৌঁছালে ১০ থেকে ১২ জনের একটি ডাকাত দলের মুখোমুখি হন তিনি। তাঁরা তাঁকে সড়কের ওপর ফেলে মারধর করে। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরের দিন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ২৯ জুলাই রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর ওই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর নিহত ব্যক্তির ভাই এইচ এম আকরামুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১২ ডাকাত সদস্যকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দেলোয়ার হোসেন, ইদ্রিস হাওলাদার ও মোস্তফা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২০১০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মঠবাড়িয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। মামলার ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক পাঁচ আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন। আসামি ইদ্রিস হাওলাদার ও বাচ্চু তালুকদার পলাতক। এ ছাড়া মোস্তফা নামের এক আসামি মৃত্যুবরণ করেন।

মামলার বাদী এইচ এম আকরামুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এ রায়ে খুশি।’

সরকারপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) খান মো. আলাউদ্দিন। আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন আহসানুল কবির।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসানুল কবির বলেন, ‘আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’