বিভাগীয় প্রধানের অফিস কক্ষে খাট, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের অফিস কক্ষের পাশে খাট পাওয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিভাগীয় প্রধানদের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে কক্ষ থেকে খাটটি সরিয়ে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন জানান, বিভাগের প্রধানের কক্ষের পাশে একটি গোপন কক্ষে খাট আছে—এমন খবরে সকাল থেকেই কিছু শিক্ষার্থী বিক্ষুব্ধ হতে থাকেন। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় প্রধানের কক্ষে গিয়ে খাট দেখতে পান। এতে তাঁরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। মিছিল থেকে শিক্ষার্থীরা ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সাবেক প্রধান মো. কামরুজ্জামান ও বর্তমান প্রধান আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।


বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগে নিয়মিত কোর্সের পাশাপাশি সান্ধ্যকালীন বিভিন্ন কোর্স আছে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য সাবেক বিভাগীয় প্রধান গোপন কক্ষটিতে খাট পেতেছিলেন। এখন বর্তমান বিভাগীয় প্রধান খাটটি ব্যবহার করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রধানের কক্ষে খাট থাকা অনৈতিক। এটা শিক্ষার্থীদের জন্য মানহানিকর। ফলে তাঁরা এর প্রতিবাদ জানাতে বিক্ষোভ করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একজন শিক্ষকের কক্ষের সঙ্গে এমন পৃথক কক্ষ কোনো শালীনতার মধ্যে পড়ে না। স্পর্শকাতর এই বিষয়ে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে বিচার হওয়া প্রয়োজন।

এ নিয়ে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বর্তমান প্রধান আমিরুল ইসলাম বলেন, সান্ধ্যকালীন ও নিয়মিত কোর্সের ক্লাস নেওয়ার জন্য শিক্ষকদের দীর্ঘক্ষণ ক্যাম্পাসে থাকতে হয়। ফলে তাঁদের বিশ্রামের জন্য পূর্বের বিভাগীয় প্রধান বিশ্রাম কক্ষটি তৈরি করেন, যা শুধু বিশ্রামের জন্যই ব্যবহার হয়েছে।

বিভাগের সাবেক প্রধান মো. কামরুজ্জামান বলেন, প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ বিভাগের বিভিন্ন গোপন কাজের জন্যে ২০১৪ সালে তৎকালীন প্রশাসনের অনুমতিতেই কক্ষটি তৈরি করা হয়েছিল। এখানে অনৈতিক কিছু হয়নি। অভ্যন্তরীণ শিক্ষক রাজনীতির কারণে দীর্ঘদিন পর বিষয়টি নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এটা দুঃখজনক ও মানহানিকর। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রীতম কুমার দাস বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধানের কক্ষে এ ধরনের খাট বিছানোর সুযোগ আছে কি না, তা আমার জানা নেই। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা খাটটি সরিয়ে দিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে লিখিত কোনো অভিযোগ পেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।