ইটিআই মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুককে স্ট্যান্ড রিলিজ

নির্বাচন কমিশনের কয়েকজন কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে (স্ট্যান্ড রিলিজ) বদলি করা হয়েছে। এদের মধ্য নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (ইটিআই) মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুকও আছেন। তাঁকে বদলি করে ফরিদপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার পদে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের সহকারী সচিব মোহাম্মদ শহীদুর রহমানের সই করা বদলির আদেশটি গতকাল মঙ্গলবার জারি করা হয়েছে।

ইসি সচিবালয় সূত্র জানায়, সংসদ ও উপজেলা নির্বাচনের প্রশিক্ষণে সম্মানিভাতার নামে আর্থিক অনিয়ম করার অভিযোগে মোস্তফা ফারুককে বদলি করা হয়েছে। আর্থিক এই অনিয়ম নিয়ে গত ৬ আগস্ট প্রথম আলোতে ‘বক্তৃতা ভাতা’র নামে টাকা লোপাট শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

মোহাম্মদ শহীদুর রহমানের সই করা বদলির আদেশে আরও তিন কর্মকর্তা স্ট্যান্ড রিলিজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ফরিদপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা নুরুজ্জামান তালুকদারকে ইটিআইয়ের মহাপরিচালক, সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেনকে নির্বাচন কমিশনের সচিবালয়ের পরিচালক এবং নির্বাচন কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামানকে সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা পদে বদলি করা হয়েছে। এই কর্মকর্তাদের আজ বুধবারের মধ্যে তাদের বর্তমান কর্মস্থল ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। আদেশে বলা হয়েছে, তা না-হলে বৃহস্পতিবার তারা তাৎক্ষণিক অবমুক্ত বলে গণ্য হবেন।

ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও কয়েক মাস আগে শেষ হওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক অর্থ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। এই দুটি নির্বাচনে প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ ছিল ১২৩ কোটি টাকা। অভিযোগ উঠেছে, বিশেষ বক্তা, কোর্স উপদেষ্টা, কোর্স পরিচালক ও কোর্স সুপারভাইজার নামে বিভিন্ন পদ সৃজন করে সিইসি, চার কমিশনার ও ইসি সচিবালয়ের অন্য কর্মকর্তারা সম্মানি ভাতা গ্রহণ করেছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত নীতিমালায় নেই। এদের মধ্যে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, ইসি সচিবালয়ের সাবেক সচিব (বর্তমানে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব) হেলালুদ্দীন আহমেদ, ইটিআইয়ের মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুকসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা প্রশিক্ষণস্থলে না গিয়েই টাকা উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগ আছে। বিশ্লেষকেরা এই প্রক্রিয়ায় ভাতা গ্রহণকে অনৈতিক বলে আখ্যায়িত করেছেন।

অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে ইটিআইয়ের মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুক বলেন, প্রশিক্ষণের নামে অর্থ লুটের কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচনের প্রশিক্ষণ পরিচালনার জন্য প্রথমত মাঠ পর্যায় থেকে চাহিদা পাওয়া গেছে। তারপর সেই চাহিদা মোতাবেক প্রস্তাব করেছে ইটিআই, যা কমিশন অনুমোদন করেছে।

জানা যায়, ইসি সচিবালয়ের সচিব বর্তমান মো. আলমগীর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নির্বাচন প্রশিক্ষণের নামে বিশেষ বক্তা, কোর্স উপদেষ্টা, কোর্স পরিচালক এবং কোর্স সুপারভাইজারের নামে সম্মানী বরাদ্দ বন্ধ করার প্রস্তাব করে কমিশনে নথি উত্থাপন করেছেন।