জাহালম-কাণ্ড: হাইকোর্টে ১১ কর্মকর্তার নাম জমা দিল দুদক

জাহালম।  ফাইল ছবি
জাহালম। ফাইল ছবি

সোনালী ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় নিরীহ জাহালমকে আসামি করার দায়ে যে ১১ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে, তাঁদের তালিকা হাইকোর্টে জমা দিয়েছে দুদক।

বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে গতকাল এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।

দুদকের এই ১১ কর্মকর্তা হলেন, দুদকের পরিচালক আবদুল্লাহ আল-জাহিদ, উপপরিচালক শেখ মেজবাহ উদ্দিন, মাসুদুর রহমান, দেবব্রত মণ্ডল, সেলিনা আক্তার মনি, সহকারী পরিচালক সুমিত্রা সেন, সিলভিয়া ফেরদৌস, মেফতাহুল জান্নাত, মুহম্মদ জয়নাল আবেদীন, সাইদুজ্জামান ও রাফী মো. নাজমুস সাদাত।
আগামী ২৪ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতকে বলেন, এই ১১ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেছে দুদক। এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে। জাহালমকে আসামি করার ঘটনায় এই মামলা করেছে দুদক।

খুরশীদ আলম খান আদালতকে আরও জানান, সোনালী ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের ঘটনার ৩৩টি মামলা পুনঃ তদন্ত চলছে। আগের কোনো তদন্তকারী কর্মকর্তা এই পুনঃ তদন্তের সঙ্গে যুক্ত নেই। শুনানির সময় আদালত বলেন, সরল বিশ্বাসে জাহালমকে আসামি করা হয়েছিল বলে মনে হচ্ছে না। আমাদের মনে হচ্ছে, এখানে দুদকের কর্মকর্তাদের অবহেলা ছিল।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, জাহালমের ঘটনা জানার পর থেকে দুদক যা যা পদক্ষেপ নিয়েছে, তা আদালতকে জানানো হয়েছে। জাহালমকে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্মকর্তারা ভুলপথে পরিচালিত করেছিলেন। ব্যাংক কর্মকর্তাদের এখানে দায় আছে।
আদালত তখন বলেন, দুদকের কর্মকর্তাদের ভুলের কারণে জাহালমকে কারাভোগ করতে হয়েছে। জাহালমকে তো আর কেউ তিন বছর ফিরিয়ে দিতে পারবে না।

দুদকের আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত আরও বলেন, ‘জাহালমের ঘটনায় আমাদের রুল ছিল দুটি। ১ নম্বর রুল ছিল জাহালমকে কেন মুক্তি দেওয়া হবে না। জাহালমকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ২ নম্বর হলো, জাহালমের ক্ষতিপূরণ। সেটি আমরা দেখব।’
ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে আদালতে হাজির ছিলেন আইনজীবী আসাদুজ্জামান। আর সোনালী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন শেখ মো.জাকির হোসেন।

গত ৩০ জানুয়ারি প্রথম আলোয় ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় । প্রতিবেদনটি সেদিন হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত। শুনানি নিয়ে আদালত জাহালমের আটকাদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারি করেন। এরপর হাইকোর্টের আদেশে গত ৩ ফেব্রুয়ারি পাটকলশ্রমিক জাহালম কারাগার থেকে ছাড়া পান।