পৃথক খুনের দায়ে ১৫ জনের যাবজ্জীবন

খুনের দায়ে দুই জেলায় ১৫ জনেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। জেলা দুটি হলো খুলনা ও নারায়ণগঞ্জ। আজ বুধবার দুপুরে খুলনায় ৮ জন ও নারায়ণগঞ্জে ৭ জনকে এ সাজা দেওয়া হয়েছে।

খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় আনন্দ মণ্ডল নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে আটজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন খুলনা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সাইফুজ্জামান হিরো। এ ছাড়া প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

সাজা পাওয়া আসামিরা হলেন বটিয়াঘাটার হোগলবুনিয়া গ্রামের প্রমোদ মণ্ডল, অশোক মণ্ডল, অমর মণ্ডল, নির্মল ওরফে নিমাই মণ্ডল, গোলক মণ্ডল, রমেশ মণ্ডল, বিকাশ বালা ও দেবিতলা গ্রামের নিশাকর মণ্ডল। রায় ঘোষণার সময়ে আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে একই মামলার অপর পাঁচ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

আদালতের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মো. ছায়েদুল হক রায়ের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালের ৩০ মে রাতে পূর্বশত্রুতার জেরে উপজেলার হোগলবুনিয়া এলাকার কাছে আনন্দ মণ্ডলকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যান আসামিরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ জুন তিনি মারা যান। পরদিন তাঁর স্ত্রী দেবলা মণ্ডল বাদী হয়ে বটিয়াঘাটা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ২০০৮ সালের ২০ অক্টোবর পুলিশ ওই মামলায় ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। মামলায় মোট ২৭ সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলায় বালু ব্যবসায়ী আরাফাত হোসেনকে (২২) হত্যার দায়ে সাত আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শেখ রাজিয়া সুলতানা। একই সঙ্গে প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

সাজা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন সিদ্ধিরগঞ্জের আটি এলাকার সজীব মিয়া (২৫), একই এলাকার দেলোয়ার হোসেন (২০), জাহিদুল ইসলাম (২২), শামীম মিয়া (২৪), মনোয়ারা জুট মিল সিকিউরিটি কলোনির রফিকুল ইসলাম (৫০), তাঁর ছেলে ইউসুফ আলী (২০) ও ফতুল্লার গাবতলী এলাকার রুবেল ওরফে ইয়াসিন (২৪)। রায় ঘোষণার সময় সজিব মিয়া, রুবেল ও জাহিদুল ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা জামিনে গিয়ে পলাতক আছেন।

সরকারি কৌঁসুলি জাসমীন আহমেদ বলেন, আসামিদের মধ্যে সজীব মিয়ার নামে নারী নির্যাতনের মামলা ছিল। ওই মামলায় পলাতক ছিলেন সজীব। তবে সজীবকে পুলিশে ধরিয়ে দেন সিদ্ধিরগঞ্জের আটি ওয়াবদা কলোনির বালু ব্যবসায়ী আরাফাত হোসেন। এরপর সজীব আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে দলবল নিয়ে ২০১০ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে আরাফাতকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে খুন করেন। এ ঘটনায় আরাফাতের বাবা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলায় গ্রেপ্তারের পরে সজীব, দেলোয়ার ও রুবেল হত্যাকাণ্ডের দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আদালত এই মামলায় ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্য নেন।