অন্যের জমি দখল করে পুকুর কাটার অভিযোগ

গোপালগঞ্জ
গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় অন্যের পৈতৃক ভিটা দখল করে প্রতিবেশীরা পুকুর কাটছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের পুলিশের ভয় দেখানো হচ্ছে।

উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের লেবুতলা গ্রামের মধ্যেপাড়ার দ্বীজেন গাইনের জমি দখল করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। দ্বীজেন বলেন, তাঁর প্রতিবেশী মলিনা বিশ্বাস (৪০) তাঁদের ওই জায়গা থেকে সরিয়ে দিতে এক বছর ধরে পাঁয়তারা করছেন। এখন তাঁদের জমিতে পুকুর কাটছেন।

দ্বীজেন বলেন, ‘এই ভিটায় আমার বাবা মরেছে, ঠাকুরদা এবং বাবার ঠাকুরদা মরেছে। পাঁচ পুরুষের ভিটা থেকে জোর করে বের করে দিয়ে পুকুর কাটার কাজ শুরু করেছে। ঘরের চারপাশ দিয়ে মাটি কেটে ফেলছে। বাবার হাতের শেষ স্মৃতিটুকু আর রাখতে পারলাম না।’

দ্বীজেনের ছেলে নিতীশ গাইন বলেন, পাশের বাড়ির মলিনা বিশ্বাস তাঁদের জমি দখলের চেষ্টা করছেন অনেক দিন ধরে। জমির মালিকানা নিয়ে আদালতেও মামলা করেন মলিনা বিশ্বাস। কিন্তু আদালত সে মামলা খারিজ করে দেন। এরপর মলিনা বিশ্বাস লোকজন নিয়ে গত ২৯ জুলাই তাঁদের ঘরের সামনের থেকে মাটি কেটে পুকুর খনন করার কাজ শুরু করেন। ৩০ জুলাই তিনি টুঙ্গিপাড়া থানায় অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ এসে নিষেধ করে এবং উভয় পক্ষকে থানায় হাজির হতে বলে।

কিন্তু ওই আদেশ অমান্য করে ২ আগস্ট মলিনা লোক দিয়ে পুনরায় মাটি কাটেন এবং তাঁদের রান্নাঘর, নলকূপ ভেঙে অন্যত্র ফেলে দেন। এমনকি বসতঘরের সিঁড়ি ও মেঝের মাটিও কেটে ফেলেন। তিনি বিষয়টি পুনরায় থানায় জানালে পুলিশ এসে মাটি কাটা বন্ধ করে এবং উভয় পক্ষকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত নীরব থাকার জন্য অনুরোধ করে।

গত শনিবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, টুঙ্গিপাড়া-বাশবাড়িয়া সড়কের পাশে লেবুতলা মধ্যপাড়ায় গাইন বাড়ি। দ্বীজেনের ঘরের চারপাশ থেকে মাটি খনন করে গর্ত করে রাখা হয়েছে। রান্নাঘর ও নলকূপ ভেঙে অন্যত্র ফেলা হয়েছে।

দ্বীজেন গাইন বলেন, প্রায় ১৫০ বছর ধরে তাঁর পরিবারের লোকজন এখানে বসবাস করছে। পাশের বাড়ির কিশোর বিশ্বাসের স্ত্রী মলিনা কয়েক মাস আগে এসে বলেন, তাঁদের ঘর এখান থেকে সরিয়ে নিতে। এটা তাঁদের (মলিনাদের) জমি। তাঁরা বাধা দিলে মলিনা তাঁদের পুলিশের ভয় দেখান।

মলিনা বিশ্বাস বলেন, তাঁর শ্বশুর তাঁর জায়গা তাঁকে লিখে দিয়ে গেছেন। ওই জায়গায় দ্বীজেন গাইনের ঘর। তাই তিনি টুঙ্গিপাড়া থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বিষয়টি জানিয়েছেন। ওসি তাঁকে বলেছেন, তাঁর জায়গায় তিনি যেন কাজ করেন। কেউ তাঁকে বাধা দেবে না। তিনি ওই জায়গায় পুকুর কাটবেন। তবে পুলিশ এসে বলে গেছে, ১৫ আগস্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে। এরপর আবার কাজ শুরু করবেন।

টুঙ্গিপাড়া থানার ওসি এ কে এম এনামুল কবীর বলেন, ওই জায়গায় যে যেভাবে আছেন, সেভাবে থাকবেন। কোনো বিবাদ না হয়, সে জন্য উভয় পক্ষকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। তবে তিনি কোনো পক্ষকে এ রকম নির্দেশ দেননি।