গণপূর্তের জমিতে 'অবৈধ' সাইনবোর্ড

বরগুনায় জেলা পরিষদের মিলনায়তন নির্মাণের জন্য সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার শহরের থানাপাড়া এলাকায়।  প্রথম আলো
বরগুনায় জেলা পরিষদের মিলনায়তন নির্মাণের জন্য সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার শহরের থানাপাড়া এলাকায়। প্রথম আলো

বরগুনা শহরের থানাপাড়া এলাকায় মিলনায়তন ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাসভবন নির্মাণের জন্য গণপূর্ত বিভাগের জমিতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ।

তবে গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, পূর্বানুমতি ও অনাপত্তি ছাড়াই এসব জমিতে বেআইনিভাবে সাইনবোর্ড লাগিয়েছে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে তাঁরা জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছেন।

জুলাইয়ের শেষ দিকে বরগুনা শহরের থানাপাড়া এলাকায় কড়ইতলা মৌজার ১ নম্বর খতিয়ানের পাঁচটি দাগে গণপূর্ত বিভাগের অধিগ্রহণকৃত জমিতে জেলা পরিষদ ১ হাজার আসনের একটি মিলনায়তন-কাম-মাল্টিপারপাস হল এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাসভবন নির্মাণের জন্য দুটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়। এই জমির মধ্যে দুটি জলাধার রয়েছে। এর একটি জলাধারের মধ্যে মিলনায়তন করতে চায় জেলা পরিষদ। আর তার পাশেই ৩৪ শতক জমির একটি প্লটে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাসভবন নির্মাণের জন্য সাইনবোর্ড ঝোলানো হয়। বর্তমানে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ওই দুটি জলাধার মাছ চাষের জন্য ইজারা দেওয়া হয়। 

গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গত জানুয়ারিতে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় জেলা পরিষদকে ওই জমি বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের কাছ থেকে জেলা পরিষদ অনুমতি না নিয়েই সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে। 

এ সম্পর্কে গণপূর্ত বিভাগের বরগুনা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী ও পিরোজপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বনাথ বণিক বলেন, ‘গণপূর্ত বিভাগের জমি জেলা প্রশাসক বরাদ্দ দিতে পারেন না। তা ছাড়া এটা স্থানীয় কার্যালয় থেকেও দেওয়া যায় না। বিষয়টি অবহিত করে জেলা প্রশাসককে আমরা চিঠি দিয়েছি।’

সরেজমিনে দেখা যায়, বরগুনার গণগ্রন্থাগারের সামনের সড়কের পশ্চিম পাশে প্রায় এক একর আয়তনের জলাধার। এখানে ‘১০০০ আসনবিশিষ্ট অডিটরিয়াম নির্মাণের নির্ধারিত স্থান’এবং একই সড়কের দক্ষিণ দিকে বরগুনা পৌর পানি সরবরাহ অফিসের সামনে ‘জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বাসভবনের জন্য নির্ধারিত স্থান’ লেখাসংবলিত দুটি সাইন বোর্ড টাঙানো। জলাধারের পশ্চিম পাশে ৩০টি পরিবারের বসবাস। এসব পরিবারের সদস্যরা এই জলাধারের পানি নানা কাজে ব্যবহার করেন। 

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা রেজল্যুশনের মাধ্যমে এই জমি জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে নিয়েছি। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এই জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তাই নির্ধারিত স্থান হিসেবে সাইনবোর্ড টাঙিয়েছি। যখন প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু করব, তখন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নেব।’

এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, জেলা পরিষদকে জমি বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। বিষয়টির খোঁজখবর নেবেন।