৩ দিনেও খোঁজ মেলেনি ইয়াছমিন ও মুক্তার

দুই বোন ইয়াছমিন বেগম (১১) ও মুক্তা বেগম (৯)। শখের বশে বিলে গিয়েছিল মাছ ধরতে। এরপর তারা নিখোঁজ হয়। ঘটনার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো তাদের খোঁজ মেলেনি।

বান্দরবানের লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের বাতেনটিলা এলাকার চরু বিলে মাছ ধরতে গিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিখোঁজ হয় ইয়াছমিন ও মুক্তা।

ইয়াছমিন ও মুক্তা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বাতেনটিলা গ্রামের মনির আহম্মদের মেয়ে। তারা ইউনিয়নের ক্রংতং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী।

গজালিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য উসাচিং মার্মা বলেন, বাড়ির পাশে বমু খাল পেরিয়ে চরু বিলে মাছ ধরতে গিয়েছিল ইয়াছমিন ও মুক্তা। এরপর আর ওই দুই বোন বাড়ি ফেরেনি। ধারণা করা হচ্ছে, মাছ ধরে বাড়ি ফেরার পথে বমু খাল পাড়ি দেওয়ার সময় খালের চোরাবালিতে পড়ে অথবা পানির স্রোতে ভেসে গিয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

নিখোঁজ ইয়াছমিন ও মুক্তার বাবা মনির আহম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেয়ে দুইটারে বমু খালের আশপাশে ও বিভিন্ন জায়গাতে খোঁজাখুঁজি করেছি। এখনো আমার মেয়েদের খোঁজ পাইনি। শনিবার ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে বমু খালে খুঁজেও পায়নি।’

লামা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লিডার মো. মোজাম্মেল হক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর এ জান্নাত রুমির মাধ্যমে বেলা দুইটার দিকে খাল পাড়ে দুই শিশুর নিখোঁজ হওয়ার খবর পান। এরপর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল বেলা তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিখোঁজ দুই শিশুর সন্ধান চালায়। ঘণ্টাখানেক সন্ধানের পরও শিশু দুটির কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

নিখোঁজ দুই বোনের চাচাতো ভাই মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘দুই মেয়ে নিখোঁজের পর থেকে আমার চাচা ও চাচি এখন প্রায় পাগল হয়ে গেছেন। আমরা এখনো সম্ভাব্য সব জায়গাতে খুঁজছি। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল যদি বমু খালে আরও কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করত, তাহলে হয়তো মৃত অবস্থায় হলেও আমার বোনের সন্ধান পাওয়া যেত।’

লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর এ জান্নাত রুমি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকে দুই শিশু নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি আমি শুনেছি। শনিবার সংবাদটি শুনে তাৎক্ষণিক লামা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে ফোন করে জানাই। তারা সম্ভাব্য সব জায়গাতে খোঁজাখুঁজি করেও শিশু দুটির খোঁজ পায়নি।’

লামা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আমিনুল হক বলেন, ‘দুই শিশুর নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ আমার জানা নেই। থানায় কেউ অভিযোগ করেনি।’