ছাত্রলীগের সংঘর্ষের জেরে চবির শাটল ট্রেন বন্ধ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের হোসপাইপ কেটে দিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। আজ রোববার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় রুটে কোনো শাটল ট্রেন চলাচল করেনি। ছবি: সৌরভ দাশ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের হোসপাইপ কেটে দিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। আজ রোববার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় রুটে কোনো শাটল ট্রেন চলাচল করেনি। ছবি: সৌরভ দাশ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের জের ধরে শাটল ট্রেনের হোস পাইপ কেটে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলে শিক্ষকবাহী বাসের চাকা পাংচার করে দেওয়ায় বাস চলাচলও বন্ধ আছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে হোস পাইপ কাটার ঘটনা ঘটে।

এর আগে গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপদল চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) ও বিজয়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ক্যাম্পাসের শাহ আমানত, সোহরাওয়ার্দী ও আলাওল হলের সামনে সংঘর্ষের এই ঘটনায় বিজয়ের ৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এই দুই পক্ষই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

ট্রেনের হোস পাইপ কাটার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশনমাস্টার তন্ময় চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শাটল ট্রেনের হোস পাইপ কেটে দেওয়ায় ট্রেন চলাচল বন্ধ। এ ছাড়া ট্রেনের সহকারী চালককেও অপহরণ করা হয়েছে।

ছাত্রলীগ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে শাহ আমানত হলের সামনে বিজয়ের নেতা মো. ইলিয়াসের সঙ্গে সিএফসির নেতাদের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মো. ইলিয়াসকে মারধর করে সিএফসির নেতা-কর্মীরা। এই ঘটনা জানাজানি হলে বিজয়ের কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী ও আলাওল হলের সামনে অবস্থান নেন। পরে দুই পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় ইটের আঘাতে পাঁচ কর্মী আহত হন। শেষে রাত দুইটায় পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

শাটল ট্রেনের হোস পাইপ কাটার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বিজয় পক্ষের নেতা ও সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এইচ এম তারেকুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রেজাউল হক রুবেল একজন অছাত্র। তাঁকে নানাভাবে সহযোগিতা করতে চেয়েছি। কিন্তু তাঁর নির্দেশে কোনো কারণ ছাড়া বিজয়ের কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার না করা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরোধ কর্মসূচি চলবে।’

তবে এই ঘটনায় বিজয়ের নেতাদের দোষারোপ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিজয়ের নেতা মো. ইলিয়াস দীর্ঘদিন ধরে আমার বিরোধিতা করে আসছেন। গত রাতে কোনো কারণ ছাড়াই সোহরাওয়ার্দী হলে গিয়ে সে আমার কর্মীদের হুমকি দেন। পরে কর্মীরা একত্রিত হয়ে তাঁকে প্রতিহত করেন।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রণব মিত্র চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ট্রেন ও শিক্ষক বাস চলাচল বন্ধ আছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব যানবাহন মেরামত করতে সময় লাগছে। এ ছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।