৩ শিশু মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ অ্যাসিড

পানি ভেবে ব্যাটারির অ্যাসিড পান করে অথবা অ্যাসিড থেকে উৎপন্ন হওয়া গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় মসজিদের ইমামের কক্ষে তিন শিশুর মৃত্যু হয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পুলিশ ও সিআইডির একটি বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ মন্তব্য করেছে।

গত শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের সময় উপজেলা সদরের পূর্ব কলাদী জামে মসজিদ এলাকায় মসজিদটির ইমাম মো. জামাল উদ্দিনের মসজিদসংলগ্ন কক্ষ থেকে তাঁর আট বছরের ছেলে আবদুল্লাহ আল নোমান, ইব্রাহিম (১২) এবং রিফাত (১৫) নামের তিন শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়।

শিশুদের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে গত শুক্রবার রাতে ঢাকার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দুটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ওই দলে ছিলেন সিআইডির পরিদর্শক মর্তুজা কবির ও রাসায়নিক বিশেষজ্ঞ পিন্টু পোদ্দার। ঘটনাস্থল থেকে তাঁরা বিভিন্ন আলামত ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ছোট্ট যে কক্ষ থেকে শিশুদের লাশ উদ্ধার করা হয়, সেটিতে দুটি ছোট্ট জানালা ও একটি দরজা আছে। কক্ষের ভেতরে সৌরবিদ্যুতের দুটি ব্যাটারি ও মাইকের একটি ব্যাটারি আছে। গত শুক্রবার সারা দিন ওই এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। ধারণা করা হচ্ছে, পানি মনে করে শিশুরা ব্যাটারির অ্যাসিড পান করতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, শুক্রবার দুপুরে ওই এলাকায় ৩২ থেকে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। ইমামের কক্ষে যে তিনটি ব্যাটারি ছিল, সেগুলোর পানিতে সালফিউরিক আ্যসিডের মিশ্রণ ছিল। সম্ভবত তীব্র গরম ও তাপের কারণে সালফিউরিক অ্যাসিড বাষ্পীভূত হয়ে সালফারে পরিণত হয়েছিল। পরে অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে সালফার ডাই ও সালফার ট্রাই–অক্সাইডে রূপান্তরিত হয়। ওই বিষাক্ত গ্যাসে দমবন্ধ হয়ে তারা মারা যেতে পারে।

মতলব সরকারি ডিগ্রি কলেজের রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মো. মোশারেফ হোসেন বলেন, পানি মনে করে বাচ্চারা অ্যাসিড পান করতেও পারে।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্বপন কুমার আইচ বলেন, তিন শিশুর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।