ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সেতু পারাপার

ভাঙা সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। গত শুক্রবার পানছড়ির দুদুকছড়ায়। প্রথম আলো
ভাঙা সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। গত শুক্রবার পানছড়ির দুদুকছড়ায়। প্রথম আলো

খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার লোগাং ইউনিয়নের দুদকছড়ার ওপর নির্মিত সেতুর মাঝ বরাবর ভেঙে একটা অংশ দেবে গেছে। বিকল্প না থাকায় বাধ্য হয়ে ১১টি গ্রামের বাসিন্দাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ওই সেতু দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশাও। যেকোনো মুহূর্তে সেতুটি ধসে পড়ে হতাহতের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন। 

স্থানীয়েরা অভিযোগ করেন, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি বিষয়ে আলোচনার জন্য দুদকছড়া এলাকায় তড়িঘড়ি করে সেতুটি নির্মাণ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। দুই দশকের পুরোনো এই সেতু নড়বড়ে হয়ে পড়েছে বছর দুয়েক আগে। এরপরও সেতুর সংস্কার করা হয়নি। গত মাসের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের স্রোতে সেতুর মাঝের একটি পিলার দেবে যায়। এতে ধসে না পড়লেও মাঝ বরাবর ভেঙে যায় সেতুটি। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন লোগাং ইউনিয়নের দুদকছড়া, হারুবিল, শনখোলাপাড়া, বাবুরপাড়া, হাঁতিমুড়া, রুপসেনপাড়া, সীমানা আদামসহ ১১টি গ্রামের লোকজন চলাচল করে। 

লোগাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রত্যুত্তর চাকমা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ মাসিক সমন্বয় মিটিংয়ে সেতুর বিষয়ে জানানো হয়েছে। বিকল্প রাস্তা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ পারাপার করছে সেতু দিয়ে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ৫০ ফুট দীর্ঘ ও ৫ ফুট চওড়া সেতুর মাঝ বরাবর ভেঙে গছে। ভাঙা সেতু দিয়ে চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও জিপ গাড়ি। তবে বেশির ভাগ লোকজন হেঁটেই পার হচ্ছে।

১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নয়ন চাকমা বলেন, সেতুটি ভেঙে পড়ার পর সপ্তাহখানেক গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পরে বিকল্প সড়ক না থাকায় মানুষের দুর্দশার কথা বিবেচনা করে সেতুটি খুলে দেওয়া হয়। 

রুপসেনপাড়া এলাকার জিপচালক অমল বিকাশ চাকমা বলেন, সেতু ভেঙে গেলেও করার কিছু নেই। বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সেতু পারাপার করতে হয় গাড়ি নিয়ে।

শিক্ষার্থী যূথী চাকমা, রুপনা চাকমা, সোহাগ চাকমাসহ একাধিক শিক্ষার্থী বলে, ভাঙা সেতু পার হয়েই তারা বিদ্যালয়ে যায়। তবে সেতুটি পার হতে ভয় লাগে। বৃষ্টি হলে হেঁটে পার হওয়া খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। তখন তাদের বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। 

পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ওই স্থানে নতুন একটি সেতু নির্মাণের জন্য দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠিয়েছি। আশা করি আগামী অর্থবছরে সেতুটি নির্মাণ করা হবে।’