যশোরে বন্ধুদের সহায়তায় স্বামীকে খুন করেন স্ত্রী, বলছে পিবিআই

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দাম্পত্য কলহের জের ধরে স্বামীকে গলা কেটে খুন করেন স্ত্রী। সহায়তাকারী হিসেবে ছিলেন তাঁর দুই বন্ধু। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে।

যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি এলাকা থেকে গত ২৮ আগস্ট সকালে এ টি এম হাসানুজ্জামান (৪৫) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির স্ত্রী তাহমিনা পারভীন (৩৭) ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত গাড়ির চালক হুসাইন আহম্মেদকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে গতকাল রোববার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তাহমিনা।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই যশোরের পরিদর্শক গাজী মাহবুবুর রহমান গত শনিবার তাহমিনাকে গ্রেপ্তার করেন। শনিবার রাতেই গাড়িচালক হুসাইন আহম্মেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত গাড়িটিও জব্দ করা হয়।

পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, ২০ বছর আগে এ টি এম হাসানুজ্জামানের সঙ্গে তাহমিনার বিয়ে হয়। নিহত হাসানুজ্জামান ঝিনাইদহে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ছেলেকে ঢাকার কলেজে ভর্তি করে মেয়েকে কুষ্টিয়ায় রেখে ঢাকায় আসেন তাহমিনা। ঢাকায় এসে মো. আলামিন ও মো. মুরসালিন নামের দুই যুবকের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব হয়। পরে তাঁরা তিনজন মিলে স্বামী-স্ত্রী ও দেবর পরিচয়ে কেরানীগঞ্জে একটি বাসা ভাড়া করে থাকতে শুরু করেন। হাসানুজ্জামান বিষয়টি জানতে পারলে তাঁদের মধ্যে কলহ শুরু হয়। একপর্যায়ে তিনজন মিলে হাসানুজ্জামানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ২৭ আগস্ট দুই বন্ধুকে নিয়ে ঢাকা থেকে ঝিনাইদহে যান তাহমিনা। হাসানুজ্জামান ফোন করে তাহমিনার কাছে ৫০ হাজার টাকা চান। তাহমিনা তাঁকে রাতে ঝিনাইদহের একটি ক্লিনিকের সামনে এসে ২০ হাজার টাকা নিয়ে যেতে বলেন। রাত ১০টার দিকে একটি গাড়ি নিয়ে সেখানে গিয়ে হাসানুজ্জামানকে গাড়িতে উঠিয়ে নেন তাঁরা। একপর্যায়ে চেতনানাশক ব্যবহার করে হাসানুজ্জামানকে অচেতন করেন তাঁরা। পরে গলায় রশি পেঁচিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়। পরে গাড়ি থামিয়ে আলামিন ও মুরসালিন মৃতদেহ গাড়ি থেকে নামিয়ে গলা কেটে রাস্তার পাশে ফেলে দেন।

এ ঘটনায় ২৮ আগস্ট এ টি এম হাসানুজ্জামানের বড় ভাই এ টি এম হাকিমুজ্জামান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন।

পিবিআই যশোর কার্যালয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন আজ সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, দাম্পত্য কলহের কারণে স্ত্রী তাহমিনা পারভীন দুই বন্ধুর সহযোগিতায় স্বামী হাসানুজ্জামানকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর গলা কাটা হয়। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের একজন আদালতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত গাড়িটিও জব্দ করা হয়েছে।