জেনেভা ক্যাম্পে অবৈধ গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করল দুদক

মিরপুরের জেনেভা ক্যাম্পে দুদকের অভিযান। ছবি: সংগৃহীত
মিরপুরের জেনেভা ক্যাম্পে দুদকের অভিযান। ছবি: সংগৃহীত

অবৈধ গ্যাস-সংযোগের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ পেয়ে রাজধানীর মিরপুরে জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া সারা দেশে আরও পাঁচটি অভিযান চালিয়েছে সংস্থাটি।

দুদকের উপপরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ মঙ্গলবার এসব অভিযান চালানো হয়।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন-১০৬) অভিযোগ আসে, মিরপুর-১১ নম্বরে অবস্থিত জেনেভা ক্যাম্পের ভেতরে বেশ কয়েকটি ডায়িং কারখানা অবৈধ গ্যাস-সংযোগ ব্যবহার করছে। এতে মিরপুরের অধিবাসীরা গ্যাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অভিযোগ পেয়ে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ফাতেমা সরকারের নেতৃত্বে একটি দল এ অভিযান চালায়।

অভিযান সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তিতাস গ্যাসের ১২ নম্বর জোনের পাঁচজন প্রতিনিধিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পায় দুদক দল। ঘটনাস্থলে দেখা যায়, কোনো অনুমোদন ছাড়াই পাঁচটি কারখানায় লাগামহীনভাবে অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে। দুদকের উপস্থিতিতে ওই পাঁচ কারখানার গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ দুদক দলকে আশ্বস্ত করে বলেছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদের এ অপব্যবহার রোধে ওই এলাকায় অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বিআরটিএর ঝালকাঠি কার্যালয়ে দুদকের অভিযান
এদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ঝালকাঠি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। বরিশাল সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দুদকের দলটি দেখতে পায়, পরীক্ষা ছাড়াই সেখানে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে। পাশের বিভিন্ন জেলা (পিরোজপুর, বরিশাল, বরগুনা) থেকেও লাইসেন্স পাওয়ার জন্য মানুষ সেখানে যান। অর্থের বিনিময়ে তড়িঘড়ি করে শিক্ষানবিশ লাইসেন্স দেওয়ার প্রমাণও পায় দুদকের দলটি। ওই অফিসের ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানের অনুমোদন চেয়ে কমিশনের কাছে প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে দুদকের দলটি।

বিপিডিবিতে দুদকের অভিযান
মিটারে প্রদর্শিত বিলের চেয়ে অতিরিক্ত বিল দিয়ে গ্রাহককে হয়রানির অভিযোগে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডে (বিপিডিবি) অভিযান চালিয়েছে দুদক। দুদকের টাঙ্গাইল সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল এ অভিযান চালায়। অভিযানে অভিযোগের সত্যতা পায় দুদক দল। অভিযোগ পাওয়া যায়, ওই এলাকার অধিকাংশ মিটার রিডারই মিটার চেক না করে বাড়তি বিল দেন। কিছু অসাধু মিটার রিডার অবৈধ অর্থের বিনিময়ে বিল কমিয়ে দেন এমন অভিযোগও পাওয়া যায়। দুদক দলের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছে বিপিডিবি কর্তৃপক্ষ।

এ ছাড়া অবৈধভাবে জলমহাল দখল, পাসপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘুষ দাবি ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ এবং ও ভুয়া রেকর্ডপত্র তৈরি করে দলিল রেজিস্ট্রির অভিযোগে যথাক্রমে হবিগঞ্জ সমন্বিত জেলা কার্যালয় ও রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে তিনটি অভিযান পরিচালিত হয়।