খালেদা জিয়া হাইকোর্টে আবার জামিন আবেদন করেছেন

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও বিচারপতি এ এস এম আবদুল মোবিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ মঙ্গলবার জামিন আবেদনটি তুলে ধরা হয়।

প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মঙ্গলবার সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ‘খালেদা জিয়ার ডায়বেটিসটা এত বেড়েছে, তাতে করে তাঁর কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। চিকিৎসকের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, খালেদা জিয়ার অবস্থা এমন যে, যেকোনো সময় তিনি হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হতে পারেন। তার এই যে অবস্থা তা সরকারও বিবেচনা করছে না। খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে আদালতে একটা আবেদন করেছি।’

খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, খালেদা জিয়ার করা জামিন আবেদনটি আগামী সপ্তাহে উপস্থাপন করতে বলেছেন আদালত। আগামী সপ্তাহে জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। ফাইল ছবি
খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। ফাইল ছবি

জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। যদিও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে বলা হয়, তাঁর অবস্থা ইমপ্রুভ (উন্নতি করেছে)। তিনি আগের চেয়ে ভালো আছেন। আগেও বলেছি, এখনো বলছি, হেঁটে হেঁটে আদালতে গেলেন। পরে সেখান থেকে হেঁটে হেঁটে কারাগারে গেলেন। অথচ যখন তিনি হাসপাতালে এলেন, হুইল চেয়ারে করে রুগণ ব্যক্তি হিসেবে এলেন। খালেদা জিয়ার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। সরকার এবং হাসপাতালের পক্ষ থেকে বলা হয়, খালেদা জিয়া সুস্থ। খালেদা জিয়ার যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে আমাদের সকলে দায়ী থাকব।’

গত বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক। রায়ে খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। বিচারিক আদালতের দেওয়া ওই সাজা বাতিল ও খালাস চেয়ে গত বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করেন খালেদা জিয়া। এর গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানি নিয়ে গত ৩০ এপ্রিল হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে ওই মামলায় খালেদা জিয়াকে বিচারিক আদালতে দেওয়া জরিমানার আদেশ স্থগিত করে বিচারিক আদালতে থাকা মামলাটির নথি তলব করেন হাইকোর্ট। দুই মাসের মধ্যে নথি পাঠাতে বলা হয়। বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি গত ২০ জুন হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরপর খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন আদালতে তুলে ধরেন তাঁর আইনজীবীরা। শুনানি নিয়ে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৩১ জুলাই জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।

দুর্নীতির পৃথক দুটি মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছেন।