বোরকা পরে ২৪ বছরের পলাতক আসামিকে ধরল পুলিশ

বোরকা পরা দুই পুলিশ সদস্যের মাঝে গ্রেপ্তার কটাই মিয়া। বিয়ানীবাজার, সিলেট, ০৩ সেপ্টেম্বর। ছবি: প্রথম আলো
বোরকা পরা দুই পুলিশ সদস্যের মাঝে গ্রেপ্তার কটাই মিয়া। বিয়ানীবাজার, সিলেট, ০৩ সেপ্টেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তিনি। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন ২৪ বছর ধরে। পলাতক থেকেই মাদক ব্যবসা চালাচ্ছিলেন, এমন অভিযোগও ছিল। বারবার চেষ্টা করেও তাঁকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছিল না। অবশেষে তিনি ধরা পড়েছেন। তবে সে জন্য অবলম্বন করতে হয়েছে ভিন্ন পন্থা। বোরকা পরে কৌশলে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

অভিনব এই ঘটনা ঘটেছে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায়। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম আবদুস সাত্তার (৪৫)। তবে এলাকায় তিনি কটাই মিয়া নামেই পরিচিত। গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে জেলা পুলিশ।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কটাই মিয়াকে বিয়ানীবাজার থানায় একটি হত্যা মামলার রায়ে ১৯৯৫ সালের ১৮ মার্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত। অনেকবার গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হলেও দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে আত্মগোপন করে ছিলেন তিনি। গোপন সূত্রে পুলিশ জানতে পারে, লুকিয়ে মাদক ব্যবসা চালাচ্ছেন কটাই মিয়া। সম্প্রতি জেলা পুলিশ মাদকের বিরুদ্ধে ঝটিকা অভিযান শুরু করলে আবারও কটাইকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হয়। গত ২৫ আগস্ট তাঁর বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশের অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যান কটাই। তবে তাঁর বাড়ি থেকে ৫০ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার করা হয়। এরপর এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কটাইয়ের গতিবিধির ওপর নজরদারি চালায় পুলিশ। একপর্যায়ে তাঁর অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে গতকাল মঙ্গলবার মাদকবিরোধী সেলের অফিসার ইনচার্জ সজল কুমার কানুর নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের প্রথম ভাগে দুজন পুলিশ সদস্য বোরকা পরে নারী সেজে কটাইয়ের বাড়িতে যান। পরে কৌশলে কটাইয়ের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অভিযানের বিষয়ে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কটাই মিয়াকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া গত ২৫ আগস্ট তাঁর বাড়ি থেকে মাদক উদ্ধারের ঘটনায় বিয়ানীবাজার থানায় মাদক আইনে একটি এবং গ্রেপ্তারের সময় আরও মাদক উদ্ধার করার পর আরও একটি মামলা হয়েছে।