উদ্বোধনের এক বছর পরও ক্যাফেটেরিয়া চালু হয়নি

নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার এক বছর পরও চালু হয়নি দিনাজপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসের ক্যাফেটেরিয়াটি।  ছবি: প্রথম আলো
নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার এক বছর পরও চালু হয়নি দিনাজপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসের ক্যাফেটেরিয়াটি। ছবি: প্রথম আলো

উদ্বোধনের এক বছর পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি দিনাজপুর সরকারি কলেজের ক্যাফেটেরিয়াটি। এটা চালু না হওয়ায় কলেজের সামনে প্রাচীর ঘেঁষে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গড়ে ওঠা কয়েকটি হোটেলে চড়া দামে খাবার খেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। 

দিনাজপুর শহরের প্রবেশমুখ সুইহারিতে ৬৬ একর জমির ওপর ১৯৪২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় দিনাজপুর সরকারি কলেজ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কলেজ ক্যাম্পাসে কোনো ক্যানটিন কিংবা ক্যাফেটেরিয়া ছিল না। এক বছর আগে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রায় ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে কলেজের পূর্ব প্রান্তে ক্যাফেটেরিয়াটি নির্মাণ করে। ২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এর উদ্বোধন করেন। 

কলেজ প্রশাসনের দেওয়া তথ্যমতে, বিভিন্ন বিভাগে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন এখানে। শিক্ষকসংখ্যা ১১৮ জন। কর্মকর্তা–কর্মচারীর আছেন ৬০ জন। ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য আছে তিনটি করে ছয়টি আবাসিক হল। আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার্থী ৭৫০ জন। ক্যাফেটেরিয়াটি চালু না হওয়ায় আবাসিক-অনাবাসিক শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা খাওয়া নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন। কলেজ ক্যাফেটেরিয়া কেউ ইজারা না নেওয়ায় এটা চালু করা যাচ্ছে না।

কলেজের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, একটি ক্লাস নেওয়ার পর যে সময়টুকু পাওয়া যায়, তখন শিক্ষক মিলনায়তনেই বসে থাকতে হয়। একটু চা-নাশতা খাওয়ার দরকার হলে যেতে হয় ক্যাম্পাসের বাইরে। তবে এত বড় ক্যাম্পাসে ক্যাফেটেরিয়া থাকা অবশ্যই দরকার। শুধু চা-নাশতা খাওয়াই বড় কথা নয়, ক্যাফেটেরিয়া শিক্ষাজীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, কলেজের প্রধান গেট থেকে শুরু করে উত্তর দিকে কলেজের সীমানাপ্রাচীরের শেষ পর্যন্ত সীমানাপ্রাচীর ও দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়ক ঘেঁষে মোট খাবার হোটেল রয়েছে পাঁচটি। চা-নাশতার দোকান রয়েছে ১১টি। খাবারের দোকানের ময়লা পানি ও আবর্জনা ফেলার কারণে কলেজের প্রাচীরের প্লাস্টার খসে পড়ছে। পানিনিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় জমে থাকছে ময়লা পানি। খাবার হোটেলগুলোতে প্রতি পিস বড় ও ছোট মাছ এক প্লেট বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা দরে, কলিজা ভুনা ৮০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ৫০ টাকা, খাসির মাংস ১০০ টাকা, ১ প্লেট সবজি ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কলেজের ইংরেজি বিভাগের শেষ বর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. ইউনুস আলী বলেন, হলের ডাইনিংয়ে ২৫ টাকা মিল চার্জ দিতে হয়। সেই টাকায় দুই বেলা খাওয়া যায়। কিন্তু খাবারের মান অতি নিম্নমানের। বাধ্য হয়ে ক্যাম্পাসের বাইরের হোটেলগুলোতে খেতে হয়। সেই হোটেলগুলোর পরিবেশ স্বাস্থ্যকর নয়। আবার দামও সাধ্যের মধ্যে থাকে না।

আবাসিক শিক্ষার্থী সমাজবিজ্ঞান বিভাগের আদুরী আক্তার বলেন, তাঁর পড়াশোনা প্রায় শেষ পর্যায়ে। পরের ব্যাচের শিক্ষার্থীরা যেন ক্যাফেটেরিয়ার সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারেন, সে জন্য দ্রুত ক্যাফেটেরিয়া চালুর দাবি জানান তিনি।

কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেন বলেন, টেবিল–চেয়ার বানানোর কাজ বাকি ছিল। সেটি শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ হয়েছে ক্যাফেটেরিয়া ইজারা নেওয়ার বিষয়ে। কলেজের ক্যাফেটেরিয়া সহজে কেউ ইজারা নিতে চায় না। তবে কয়েক মাসের মধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হবে।