স্কুল থেকে বাড়ি ফেরা হলো না রিফাতের

রাস্তায় পড়ে থাকা মরদেহটি কেউ একজন পুরোনো একটি গামছা দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন। মরদেহ ছোট্ট হওয়ায় একটি গামছা দিয়েই পুরোটা ঢেকে দেওয়া গেছে। পাশেই পড়েছিল স্কুলব্যাগ। লাশটি একটি স্কুলের শিশুশিক্ষার্থী সাত বছরের রিফাতের। ব্যাগটি তারই। স্কুল শেষে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছিল সে। বালুবোঝাই একটি ট্রাক তাকে বাড়ি ফিরতে দেয়নি।

নিহত রিফাত হাসান নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার লক্ষ্মীপুর এলাকার কৃষক রতন মিয়ার ছেলে। সে শান্তিপুর কালা মার্কেট এলাকায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত একটি স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে স্কুল শেষে বাড়ি ফেরার পথে শান্তিপুর কালা মার্কেট এলাকায় শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কে ট্রাকচাপায় রিফাত ঘটনাস্থলেই মারা যায়

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রিফাত হাসান আজ স্কুল ছুটি শেষে শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়ক দিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিল। শান্তিপুর কালা মার্কেট এলাকায় এলে দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদী থেকে ঢাকার উদ্দেশে বালু নিয়ে আসা একটি ট্রাক রিফাতকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন ট্রাকটিকে জব্দ করলেও ট্রাকের চালক ও চালকের সহকারী দৌড়ে পালিয়ে যান।

রিফাত নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী দুর্ঘটনাস্থলে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ এসে এলাকাবাসীকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

দুর্গাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মীর মাহাবুব বলেন, শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ট্রাকচালককে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, গত মার্চ থেকে চলতি সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ছয় মাসে শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কে বালুবোঝাই ট্রাক ও লরির চাপায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন স্কুলছাত্র। গত জুলাই মাসে রাকিব হাসান নামের কৃষ্ণের চর উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র টিউশন শেষে বাড়ি ফেরার পথে একই স্থানে মারা যায়। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে বালুবোঝাই দুই হাজারের মতো ট্রাক ও লরি বেপরোয়াভাবে চলাচল করে।