মা হলো সেই কিশোরী

যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় ১২ বছরের এক কিশোরী পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছে। যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আজ শনিবার সকালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই সন্তানের জন্ম হয়। ওই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা রয়েছে।

কিশোরীর চাচা বলেন, ওই কিশোরীকে গতকাল শুক্রবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে চিকিৎসক নিলুফার ইসলাম ও তানজিলা ইসলাম কিশোরীর অস্ত্রোপচার করেন। যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক সার্জন নিলুফার ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শিশুটির নিরাপদ প্রসব করানো নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। অনেক ঝুঁকি ছিল। শিশুটিকে অস্ত্রোপচার করে নিরাপদ প্রসব করানো হয়েছে। প্রসবের পর শিশুটির ওজন হয়েছে আড়াই কেজি। শিশুর অবস্থা ভালো। তবে অল্প বয়সে মা হওয়ায় কিশোরীর অবস্থা খুব একটা ভালো না। কিছু সমস্যা রয়েছে। ২৪ ঘণ্টা না গেলে কিছু বলা যাচ্ছে না।’

ধর্ষণের অভিযোগে গত ১ জুলাই শিশুটির বাবা মনিরামপুর উপজেলা পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহকারী দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়ার (৫৬) বিরুদ্ধে মনিরামপুর থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশ সেদিন রাতেই উপজেলার তাহেরপুর গ্রামের একটি ভাড়া বাসা থেকে গোলাম কিবরিয়াকে গ্রেপ্তার করে। শিশুটি তাঁর বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করত।

মামলার এজাহার ও মেয়েটির বাবার ভাষ্য অনুযায়ী, স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তাঁর যমজ দুই মেয়ে নানির কাছে থাকত। গোলাম কিবরিয়ার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত মেয়েটি। গত জানুয়ারি মাসে ফাঁকা বাসায় মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন কিবরিয়া। বাধা দিলে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন কিবরিয়া। এরপর আরও কয়েকবার তাকে ধর্ষণ করা হয়। একপর্যায়ে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায়, মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা।

জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মনিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সৌমেন বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন আছে। গ্রেপ্তার গোলাম কিবরিয়ার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নবজাতকের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে দুটো নমুনা মিলিয়ে দেখা হবে। ডিএনএ নমুনা মিলিয়ে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।