গাজীপুরে বিস্ফোরণে ধসে পড়ল রেস্তোরাঁ

বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত রেস্তোরাঁ। ছবি: প্রথম আলো
বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত রেস্তোরাঁ। ছবি: প্রথম আলো

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বোর্ডবাজার এলাকায় রাঁধুনি হোটেল নামের একটি রেস্তোরাঁয় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিস্ফোরণে রাঁধুনি রেস্তোরাঁ ধসে পড়েছে। এ ছাড়া পাশের আরেকটি রেস্তোরাঁর একাংশ ধসে গেছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ১৮ জন আহত ও দগ্ধ হয়েছেন। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রাতে পৌনে দুইটার দিকে রাঁধুনি রেস্তোরাঁয় বিস্ফোরণ হয়। বিকট শব্দে পাশের তৃপ্তি হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের একাংশ ধসে যায়। খবর পেয়ে গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট উদ্ধারকাজে অংশ নেয়। তবে বিস্ফোরণটি কী কারণে ঘটেছে, তা তারা নিশ্চিত করতে পারেনি।

এ ঘটনায় দগ্ধ ১১ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। তাঁরা হলেন আল আমিন (৩২), আরিফুল (১৮), জুবায়ের (১৬), নাজমুল (২২), জাহিদ (২৫), আলমগীর (২৭), মারুফ (২৩), মাসুদ (১৮), সুফিয়ান (২২), জাহাঙ্গীর (২০) এবং শুক্কুর আলী (১৯)।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপপরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বিস্ফোরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শুরুতে সিলিন্ডার থেকে বিস্ফোরণ বলে মনে হয়েছিল। তবে পরে দেখা গেছে, সিলিন্ডারগুলো অক্ষত। তাই ধারণা করা যাচ্ছে, বদ্ধ কক্ষে জমে থাকা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। তবে এখনো এ ব্যাপারে কিছু নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

একই কথা বলেছেন গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, সিলিন্ডার অক্ষত রয়েছে। বিস্ফোরণের সঠিক কারণ বোঝা যাচ্ছে না। তবে বিস্ফোরণের কারণে ভবনটি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে।

বিস্ফোরণের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আজ রোববার সকালে বোর্ড বাজারে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, তিনতলা একটি ভবনের নিচতলায় ছিল রাঁধুনি রেস্তোরাঁ। দ্বিতীয় তলায় আইএফআইসি ব্যাংকের বোর্ডবাজার শাখা কার্যালয় এবং তৃতীয় তলায় প্যাসিফিক রেস্টুরেন্ট। বিস্ফোরণে ভবনটির রাঁধুনি রেস্তোরাঁর অংশ পুরোপুরি ধসে পড়েছে। এর সঙ্গে লাগোয়া তৃপ্তি হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের একাংশ ধসে গেছে। আর বিস্ফোরণটি এত শক্তিশালী ছিল যে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে রাঁধুনি রেস্তোরাঁর উল্টো দিকের একটি মসজিদের জানালার কাচ ও মাইক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রাঁধুনি রেস্তোরাঁর মালিক হাবিবুর রহমান বলেন, দগ্ধ ব্যক্তিদের সবাই তাঁর কর্মচারী। রাতে কাজ শেষ করে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় বিস্ফোরণ ঘটে। যে কক্ষটি থেকে বিস্ফোরণের সূত্রপাত, সেখানে আগুন লেগে যায়। তবে আগুন ততটা ভয়াবহ ছিল না। অল্প সময়েই তা নেভানো গেছে। তিনি বলেন, ‘আমার দুটি সিলিন্ডারই অক্ষত রয়েছে। কীভাবে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল তা বুঝতে পারছি না।’

বিস্ফোরণের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এম আতিকুল ইসলাম। তিনি জানান, কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনুর ইসলামকে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।