মাদক নিয়ন্ত্রণে আনসারকে যুক্ত করার প্রস্তাবে আপত্তি

মাদকবিরোধী অভিযানে আনসারকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় মনে করে, আইনে আনসার বাহিনীকে ‘ডিসিপ্লিন ফোর্স’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। সুতরাং আনসার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নয়। তাই তাদের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেওয়া যুক্তিযুক্ত হবে না।

আজ রোববার জাতীয় সংসদে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ কথা জানায়।

এর আগে গত ২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ব্যাটালিয়ন আনসার ফোর্সকে মাদক চোরাচালান, মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য মাদকদ্রব্য আইনে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে সুপারিশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ এই প্রতিবেদন দেয়।

প্রতিবেদনের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ ও ব্যাটালিয়ন আনসার অ্যাক্ট ১৯৯৫ তুলে ধরে বলা হয়েছে, মাদকদ্রব্য আইন অনুসারে সাধারণ বা বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন কোন ব্যক্তি, পুলিশের উপপরিদর্শক, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ল্যান্স নায়েক বা তদূর্ধ্ব কোন অফিসার অথবা কোস্টগার্ড বাহিনীর পেটি অফিসার মাদকদ্রব্য অপরাধ–সংক্রান্ত অপরাধে ব্যবস্থা নিতে পারবেন। বিনা পরোয়ানায় তল্লাশির ক্ষমতা শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ন্যস্ত। ব্যাটালিয়ন আনসার অ্যাক্ট অনুযায়ী এ বাহিনীকে ডিসিপ্লিন ফোর্স হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। সুতরাং ব্যাটালিয়ন আনসার ফোর্স আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নয়, তাই তাদের এ দায়িত্ব দেওয়া যুক্তিযুক্ত হবে না।

বৈঠক সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৈঠকে জানায়, সব শ্রেণির সরকারি চাকুরিতে প্রবেশের সময় বিদ্যমান ব্যবস্থার সাথে ‘ডোপটেস্ট‘ অন্তর্ভুক্তির জন্য সব বিভাগ ও মন্ত্রণালয়কে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর নির্দেশনা দেওয়া হয়। ডোপটেস্ট বিধিমালার একটি খসড়া প্রণয়ন কার্যক্রম চলমান আছে। ১০২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘মাদকাসক্ত শনাক্তকরণে ডোপটেস্ট প্রবর্তন’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

আজকের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন সব নিয়োগের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট কার্যকরভাবে চালু রাখার লক্ষ্যে মনিটরিং সেল গঠনসহ এ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহেণের সুপারিশ করা হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এ ছাড়া বৈঠকে উপজেলা পর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাসিক সমন্বয় সভা এবং দেশব্যাপী এডিস মশা নিধনে চলমান কার্যক্রম সারা বছর অব্যাহত রাখতে সুপারিশ করা হয়। কমিটি সাধারণ কয়েদী থেকে মাদকাসক্ত কয়েদীদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে আলাদা করা এবং প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধির সুপারিশ করে।

কমিটির সভাপতি মো. শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, হাবিবর রহমান, সামছুল আলম, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, ফরিদুল হক খান, নূর মোহাম্মদ এবং সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ বৈঠকে অংশ নেন।