সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে গবেষণার মাছ দিয়ে শিক্ষক পরিষদের ভোজ

মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ব্যবহারিক ক্লাস ও গবেষণার জন্য কলেজের পুকুরে চাষ করা মাছ ধরা হচ্ছে। গতকাল রাত আটটার দিকে।  প্রথম আলো
মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ব্যবহারিক ক্লাস ও গবেষণার জন্য কলেজের পুকুরে চাষ করা মাছ ধরা হচ্ছে। গতকাল রাত আটটার দিকে। প্রথম আলো

মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাস ও গবেষণার জন্য কলেজের একটি পুকুরে মাছ চাষ করা হচ্ছে। আজ সোমবার শিক্ষক পরিষদের এক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে। শিক্ষক নেতাদের এই অনুষ্ঠানে ভোজনের জন্য গতকাল রোববার রাতে সেই মাছ ধরা হয়েছে।

কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কলেজের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে বিশাল দুটি পুকুর রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পুকুর দুটি ইজারা দেওয়া হতো। তবে ইজারাদার (মাছচাষি) মাছের খাবার হিসেবে পুকুরে গরু ও মুরগির বিষ্ঠা ব্যবহার করতেন। এতে দুর্গন্ধে কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে অনেক সমস্যা হতো। পরে ২০১৭ সালে কলেজের পূর্ব পাশের পুকুরটিতে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য মাছ ছাড়া হয়। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের এই ব্যবহারিক ক্লাস হয়ে থাকে। তবে গতকাল সন্ধ্যার পর জাল দিয়ে ওই পুকুর থেকে বেশ কিছু মাছ ধরা হয়। এই মাছ কলেজের শিক্ষক পরিষদের এক অনুষ্ঠানে ভোজনের জন্য ধরা হয়।

কলেজের শিক্ষক পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে শিক্ষক পরিষদের সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ শাখা কমিটি গঠন করা হয়। এই উপলক্ষে আজ সোমবার কলেজের মাঠে ঈদ পুনর্মিলনী ও শিক্ষক পরিষদের সদস্য পরিচিতমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাত সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটির সভাপতি (পদাধিকারবলে) হলেন কলেজের অধ্যক্ষ মো. নূরুল আমিন। এ অনুষ্ঠানে অতিথি ও আয়োজকদের ভোজনের জন্য ওই পুকুর থেকে রুই, কাতলাসহ কার্পজাতীয় মাছ ধরা হয়।

গতকাল রাত আটটার দিকে দেখা যায়, পাঁচজন জেলে টানা জাল দিয়ে মাছ ধরছেন। পরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে বলেন, দুই টানে (দুই দফায়) কমপক্ষে ১ মণ মাছ ধরা হয়েছে।

মাছ ধরার বিষয়ে কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রধান ইয়াসমিন বানু বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষার্থী ব্যবহারিক ক্লাস ও গবেষণার জন্য ওই পুকুরে মাছ চাষ করা হয়ে থাকে। এই মাছ ধরা ও শিক্ষক পরিষদের অনুষ্ঠানে খাবারে ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি একটি বিভাগের প্রধান। তবে কলেজের প্রধান প্রিন্সিপাল (অধ্যক্ষ) স্যার। এ বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলাই ভালো।’

কলেজের অধ্যক্ষ মো. নূরুল আমিন বলেন, ‘মাঝেমধ্যে অনুমতি নিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তারাও বড়শি দিয়ে এই পুকুরের মাছ শিকার করেন।
কাজেই শিক্ষক-কর্মচারীদের একটি অনুষ্ঠানে খাবারের জন্য এই মাছ ধরা অনৈতিক কেন হবে?’