যাত্রী পরিবহনের আড়ালে ছিনতাই করতেন তাঁরা
তিনজনই যাত্রী পরিবহনের সঙ্গে জড়িত। কেউ বাসের চালক, আবার কেউ চালকের সহকারী। বাসে নিয়মিত চলাচলকারী যাত্রীদের গতিবিধি অনুসরণ করতেন তাঁরা। ভাড়া নেওয়ার সময় কোন যাত্রীর কাছে কত টাকা আছে, সেটিও খেয়াল করতেন। কোনো যাত্রীর কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দেখলে চক্রের অন্যদের খবর দিয়ে দিতেন। পরে নামার সময় সুযোগ বুঝে যাত্রীর ওপর চড়াও হয়ে ছিনিয়ে নিতেন টাকা ও মূল্যবান বস্তু।
গাজীপুরের টঙ্গীতে গত শনিবার ভোরে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম (৩৫) নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলায় তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে র্যাব-১। র্যাবের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ সোমবার তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
গ্রেপ্তার তিন ছিনতাইকারী হলেন আবদুল হক, মো. সুজন ও আউয়াল হাওলাদার। তাঁদের সবার বয়স ১৯ থেকে ২৬ বছরের মধ্যে। তিনজনেরই বাসা টঙ্গীর এরশাদনগর এলাকায়। ছিনতাইয়ের মূল হোতা আবদুল হক আবদুল্লাহপুর- বাড্ডা রুটের একটি বাসের চালক। সুজন ওই রুটেরই একটি বাসের সহকারী। আর আউয়াল অটোরিকশার চালক।
নিহত কামরুলের বাড়ি নাটোর সদরে। তিনি আরএফএল কোম্পানির সিলেট জেলার জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শনিবার দুপুরেই টঙ্গী পূর্ব থানায় কামরুলের ভাই বাদী হয়ে মামলা করেন।
র্যাব-১ এর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিহত কামরুল সাপ্তাহিক ছুটি কাটিয়ে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নাটোর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। শনিবার ভোর চারটার দিকে টঙ্গীর কলেজগেট এলাকায় বাস থেকে নামতেই ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন তিনি। এ সময় ছুরিকাঘাত করে কামরুলের সঙ্গে থাকা মুঠোফোন, ল্যাপটপ ও নগদ ৩৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন তাঁরা। ঘটনাস্থলেই মারা যান কামরুল। পরে রোববার রাত আড়াইটার দিকে এরশাদনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেন র্যাবের সদস্যরা। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি সুইচ গিয়ার ও কামরুলের মুঠোফোনটি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামিরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ছিনতাই চক্রের সদস্যরা রাত ১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকায় ওত পেতে থাকেন। পরে সুযোগ বুঝে যাত্রীদের ওপর চড়াও হয়ে মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেন।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক সারওয়ার-বিন-কাশেম সাংবাদিকদের বলেন, ওই তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তারের পর তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।