থানায় ধর্ষকের সঙ্গে গৃহবধূর বিয়ের অভিযোগ, ওসি প্রত্যাহার

ওসি ওবায়দুল হক। প্রথম আলো ফাইল ছবি
ওসি ওবায়দুল হক। প্রথম আলো ফাইল ছবি

পাবনায় মামলা না নিয়ে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের একজনের বিয়ে দেওয়ার অভিযোগে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হককে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে উপপরিদর্শক (এসআই) একরামুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসব সিদ্ধান্ত নেন।

পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনা জানার পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির সুপারিশমতে দুই কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, পুলিশ জানিয়েছে, মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যজনকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন প্রধান আসামি রাসেল (২৬), শরিফুল ইসলাম ওরফে ঘন্টু (৪৫), গাড়ির চালক হোসেন আলী (৩৫) এবং সঞ্জু (২৭)। অপর আসামি ওসমান (৩৫) পলাতক।

ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে ৩ সেপ্টেম্বর ওই গৃহবধূ থানায় যান। কিন্তু পুলিশ মামলা না নিয়ে পরদিন তাঁর সঙ্গে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের একজনের বিয়ে দেন। এ ঘটনা গণমাধ্যমে আলোচিত হওয়ার পর ৭ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের মামলা নেয় পুলিশ। এজাহারে ওই নারী অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে রাসেল নামের এক যুবকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক হওয়ায় ২৯ আগস্ট তিনি স্বামীর সংসার ছেড়ে রাসেলের কাছে চলে আসেন। রাতে রাসেল তাঁকে গ্রামের এক পুকুরপাড়ে নিয়ে ওসমানের সহযোগিতায় হোসেন আলীকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য ৩১ আগস্ট রাসেল তাঁকে টেবুনিয়া এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলামের অফিস কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তিন দিন আটকে রেখে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়।

এদিকে এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ দুপুরে জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ কমিটি গঠনের তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ নেওয়াজকে প্রধান করে তিন সদস্যের এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এরপর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।