বিদ্যুতের দাম বাড়ল কোথায়, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা, ১২ সেপ্টেম্বর। ছবি: পিআইডি
জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা, ১২ সেপ্টেম্বর। ছবি: পিআইডি

বিদ্যুতের দাম বাড়ার সমালোচনাকারীদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদ্যুতের যখন চরম দুরবস্থা, তখন স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে সরকার উৎপাদন বাড়িয়েছে। এক কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ২৬ টাকা খরচ হয়। সেখানে গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ৩ থেকে ৪ টাকা।

বিদ্যুতের দাম বাড়ল কোথায়? এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাকৃতিক গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও ৬ থেকে সাড়ে ৬ টাকা লাগে। গ্যাসের সমস্যার কারণে এলএনজি আমদানি করা হয়েছে। এর দাম পড়ে ৬০ টাকা। সেখানে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। সকল কর ফ্রি করে দিচ্ছে।’

বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। গত রোববার শুরু হওয়া চতুর্থ অধিবেশন চলে মোট চার কার্যদিবস।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদন বেশি টাকায় করে ভর্তুকি দিয়ে কম টাকায় দেওয়ার পরও যদি কেউ বলেন দাম কেন বাড়ানো হলো, তাহলে বিদ্যুতের দরকার নেই। উৎপাদন করব না। বন্ধ করে দিই সব। এত কিছুর পরও যদি কথা উঠে তাহলে বিদ্যুৎ ব্যবহার করার দরকার নেই। আর তা না হলে যে দাম উৎপাদনে খরচ হবে, সেই দামে কিনতে হবে। লাভ করতে চাই না। কিন্তু অন্তত খরচের টাকাটা পেতে হবে। সেই খরচের টাকাটাও তো আমরা নিচ্ছি না।’

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে যেভাবে আওয়ামী লীগের ওপর নির্যাতন করেছিল, সে তুলনায় বর্তমান সরকার কিছুই করছে না। তিনি বলেন ‘আমাদের চলার পথ খুব মসৃণ তো ছিল না। অগ্নি-সন্ত্রাস, মানুষ খুন করা, পুড়িয়ে মারা, বিআরটিসির বাস পোড়ানো, রেল পুড়িয়ে দেওয়া। মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন যারা বিরোধী দলে আছে, তারা যেমন বিএনপি-জামায়াত দ্বারা নির্যাতিত ও নিগৃহীত হয়েছে। আমরা যারা সরকারে আছি, তাদের (বিএনপি) দ্বারা নির্যাতিত হয়েছি। সেই তুলনায় আমরা তো তাদের কিছুই করছি না। আমরা দেশ গড়ার কাজে ব্যস্ত। দেশের মানুষের কল্যাণ করার জন্য সময় দিই। সেটা আমরা করছি।’

বর্তমান সরকার রাজনৈতিক চর্চা অবাধ করে দিয়েছে ও অর্থনৈতিকভাবে দেশকে স্বাবলম্বী করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী ও নানা পদক্ষেপে তৃণমূলের জীবনমান উন্নয়নের সুফল জনগণ পাচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত থাকবে। যেভাবে দেশ উন্নত হচ্ছে, সারা বিশ্ব তা দেখছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভোটারের মঙ্গলে কাজ করা সব সাংসদের দায়িত্ব। সব এলাকায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলছে। সেগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন হচ্ছে কি না, সাংসদেরা যেন তা দেখভাল করেন। তাতে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।

সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত রাখা গেলে উন্নয়নসমৃদ্ধ সোনার বাংলা গঠন করা যাবে। তবে অনেকে বিশেষ করে যাঁরা জাতির পিতাকে হত্যা করেছেন, তাঁরা উন্নতি পছন্দ করেন না।

বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দল সব সময় গঠনমূলক কাজ করছে।