ছাত্রদলের কাউন্সিলে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা

ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিলের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন ঢাকার একটি আদালত।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মাদ সাত্তার মোল্লা বলছেন, আদালতের এই নিষেধাজ্ঞা থাকায় আগামী শনিবার ছাত্রদলের যে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা, তা করা যাবে না।

ছাত্রদলের কাউন্সিলের ওপর আদালতের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার। তিনি বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা স্থগিত চেয়ে আদালতে আবেদন করা হবে।

ছাত্রদলের আগের কমিটিতে ধর্ম বিষয়ক সহসম্পাদক পদে ছিলেন আমান উল্লাহ। ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ঢাকার চতুর্থ সহকারী জজ আদালতে আজ বৃহস্পতিবার মামলা করেন আমান উল্লাহ। শুনানি নিয়ে আদালত ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিলের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। একই সঙ্গে ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিল করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন। এ বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন আদালত। বিএনপির মহাসচিবসহ ১০ জন বিএনপি নেতাকে জবাব দিতে বলা হয়।

আমান উল্লাহর আইনজীবী মোহাম্মদ সাত্তার মোল্লা বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী ছাত্রসংগঠনগুলো রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠন হিসেবে বিবেচিত হওয়ার সুযোগ নেই। ২০১৭ সালে বিএনপি নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল, ছাত্রদল তাদের অঙ্গসংগঠন নয়, সহযোগী সংগঠন। ছাত্রদল সহযোগী সংগঠন হওয়ায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের এখানে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপের আইনগত সুযোগ নেই, যা আদালতকে বলা হয়েছে। আদালত শুনানি নিয়ে আগামী শনিবার ছাত্রদলের যে ষষ্ঠ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা তার ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।

ছাত্তার মোল্লা আরও বলেন, ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিল করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে তা জানতে চেয়েছেন আদালত। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীসহ বিএনপির ১০ জন নেতাকে জবাব দিতে বলেছেন আদালত।

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদলের কাউন্সিলের ওপর আদালতের দেওয়া অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকার বিষয়টি আমরা জেনেছি। আদালত বিএনপির মহাসচিবসহ কয়েকজনের কাছে জবাব চেয়েছেন। আমরা আদালতে হাজির হয়ে এ ব্যাপারে জবাব দেব।’

মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ছাত্রদলের সাবেক নেতা আমান উল্লাহ এই মামলা করেছেন।

গত ৩ জুন এক বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি করার ঘোষণা দেয় বিএনপি। বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষর করা বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্তি করার কথা জানানো হয়। এরপর জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীকে অপদস্থ করা এবং এর জেরে ছাত্রদলের ১২ জন নেতাকে বহিষ্কারও করা হয়।

ছাত্রদলের আমান উল্লাহর আইনজীবী সাত্তার মোল্লা দাবি করেছেন, ছাত্রদল সহযোগী সংগঠন হওয়ায় ছাত্রদলের কমিটি ভেঙে দেওয়া, ছাত্রদলের ১২ জন নেতাকে বহিষ্কার করা কিংবা ছাত্রদলের কাউন্সিলে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করার জন্য নির্বাচন পরিচালনা কমিটি করার আইনগত সুযোগ নেই, যা আদালতকে বলা হয়েছে।

তবে বিএনপি নেতা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ছাত্রদল বিএনপির সহযোগী সংগঠন। বিএনপির চেয়ারপারসন ছাত্রদলের সাংগঠনিক প্রধান আইন অনুযায়ী, ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমান উল্লাহর আইনজীবীরা যা দাবি করছেন তা সঠিক নয়।