'মিনিস্টার-মাইওয়ান কারখানা পুড়ে ক্ষতি শত কোটি টাকার'

প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রথম আলো ফাইল ছবি

গাজীপুরের ধীরাশ্রম এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে মিনিস্টার-মাইওয়ান কারখানার মালামাল পুড়ে শত কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি হয়েছে। মিনিস্টার-মাইওয়ান হাইটেক ইলেকট্রনিকস কারখানার চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক খান এ দাবি কেরছেন। আজ শনিবার সকালে তিনি কারখানার ফটকে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই দাবি করেছেন।


গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ধীরাশ্রম এলাকায় মিনিস্টার ফ্রিজ কারখানায় আগুন লাগে গতকাল শুক্রবার।

আজ এম এ রাজ্জাক খান জানান, ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডটি বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে তাদের একটি নিজস্ব তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছয় সদস্যের আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের পর অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

রাজ্জাক খান আরও বলেন, শুক্রবার কারখানাটি বন্ধ ছিল। এদিন সকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে ষষ্ঠ তলায় আগুনের সূত্রপাত হলে নিজেদের জনবল ও সরঞ্জাম দিয়ে আগুন নেভানো চেষ্টা চালানো হয়। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌঁছানোর আগেই আগুন ভয়াবহ আকার ধারন করে এবং ষষ্ঠ তলার পুরো ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে বিভিন্ন ফায়ার স্টেশন থেকে কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট ছয় ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নেভায়। ইতিমধ্যে আগুনে কারখানার ছয়তলা ভবনের ষষ্ঠ তলা এবং ছাদে মজুত থাকা বিপুল পরিমাণ এলইডি টেলিভিশন ও হোম অ্যামপ্লায়েন্সসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে গেছে। এতে ভবনেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এ সময় কারখানার পরিচালক (অপারেশন) গোলাম মোস্তফা খান, পরিচালক (অর্থ) মো. মুজিবুর রহমান, ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম স্বপন, মাইওয়ান গ্রুপের হেড অব ব্র্যান্ড অ্যান্ড মিডিয়া কে এম জি কিবরিয়াসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।


গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মামুন-অর-রশীদ গতকাল শুক্রবার জানান, প্রতিবছর কারখানার ফায়ার লাইসেন্স নবায়নের নিয়ম রয়েছে। মিনিস্টার-মাইওয়ান কারখানাটির অগ্নি লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয় ৩০ জুন। সম্প্রতি ওই কারখানার কর্তৃপক্ষ নবায়নের জন্য আবেদন করলেও নবায়নের শর্ত পূরণ না হওয়ায় তাদের লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি।

তবে এ বিষয়ে রাজ্জাক খানকে কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
সংবাদ সম্মেলনে কারখানার চেয়ারম্যান রাজ্জাক খান বলেন, অগ্নিনিরাপত্তাসহ আগুন নেভানোর সব সরঞ্জাম কারখানায় বিদ্যমান ছিল। যেহেতু এই প্রতিষ্ঠানের ষষ্ঠ তলায় থাকা সব মালামাল প্লাস্টিক জাতীয় ছিল, সে কারণে অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম থাকা সত্ত্বেও আগুন ব্যাপক আকার লাভ করায় তাদের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। তিনি এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি জানান, কারখানাটির জন্য ১২৩ কোটি টাকা বিমা করা আছে। এ ব্যাপারে তিনি বিমা কোম্পানিরও সহযোগিতা কামনা করেন।

রাজ্জাক খান বলেন, ‘সবার সহযোগিতা পেলে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হব। এখন তিন দিনের জন্য কারখানাটি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।’