মেয়েকে স্কুলে রাখতে এসে মা নিখোঁজ

রাজশাহী
রাজশাহী

বাক্‌প্রতিবন্ধী মেয়েকে রাজশাহীর বিদ্যালয়ে রাখতে এসে নাটোরের এক মা নিখোঁজ হয়েছেন। গত শুক্রবার তিনি রাজশাহীতে এসেছিলেন। আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি বাড়ি ফেরেননি। এ ব্যাপারে তাঁর ভাই বাদী হয়ে রাজশাহী নগরের বোয়ালিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

নিখোঁজ এই মায়ের নাম বিউটি খাতুন (২২)। তাঁর স্বামীর নাম সাইফুল ইসলাম। তাঁরা নাটোর সদরের বাসিন্দা।

বিউটি খাতুনকে অনেক খোঁজার পরও না পেয়ে আজ দুপুরে তাঁর ভাই মনিরুল ইসলাম থানায় জিডি করেন। বোয়ালিয়া থানার কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা শিউলী খানম জিডির বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। জিডিতে বলা হয়েছে, শুক্রবার নাটোর থেকে মেয়েকে রাজশাহীর বাক্‌-শ্রবণপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে রাখতে এসেছিলেন বিউটি খাতুন। মেয়েকে সেখানে রেখে তিনি আর বাড়ি ফিরে যাননি।

বিউটির দেবর ফজলুল হক জানান, বিউটি খাতুন দুই সন্তানের জননী। বড় সন্তান বাক্‌প্রতিবন্ধী। তার নাম সুমাইয়া। ছোটটি ছেলে। নাম তামিম আহমেদ। সুমাইয়া রাজশাহীর প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে। তাকে রাখতেই বিউটি নাটোর থেকে শুক্রবার রাজশাহীতে আসেন। মেয়েকে স্কুলে রাখার পর নিজের পায়ের সমস্যায় চিকিৎসক দেখানোর জন্য সেদিন বাড়ি যাননি তিনি। রাজশাহীতে এক আত্মীয়ের বাসায় থেকে যান। শনিবার চিকিৎসক দেখানো শেষে বিকেলে বাড়ির দিকে রওনা দেন। কিন্তু রাত হয়ে গেলেও তিনি বাড়ি পৌঁছাননি। তখন থেকে তাঁর মুঠোফোনটিও বন্ধ আছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন।

রোববার সন্ধ্যায় রাজশাহীর বাক্‌-শ্রবণপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে গিয়ে শিশু সুমাইয়াকে পাওয়া যায়। সে বিদ্যালয়ের মহিলা ছাত্রীনিবাসে থাকে। সুমাইয়া এখনো জানে না তার মা নিখোঁজ হয়েছেন।

বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তাহমিদা খাতুন বলেন, শিশুটি যেহেতু কিছুই শুনতে পায় না, সে জন্য মায়ের বিষয়টি তাকে জানানো যায়নি। তিনি জানান, শুক্রবার সুমাইয়ার মা চিকিৎসক দেখিয়ে বিদ্যালয়ের হোস্টেলে এসেছিলেন। তখন তিনি মেয়ের রুম গুছিয়ে দিয়ে যান।

বিউটির দেবর ফজলুল হক বলেন, একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে বিউটির সন্ধান চেয়ে পরিবারের দুটি ফোন নম্বর দিয়েছিলেন। রোববার দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে ফোন করে তাঁদের জানানো হয়েছিল, সেখানে আহত অবস্থায় বিউটি খাতুনকে পাওয়া গেছে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত বিউটির ওষুধ কেনার জন্য জরুরি ভিত্তিতে টাকা পাঠাতে হবে। এ খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা নাটোর সদর থানায় যান। পুলিশের মাধ্যমে তাঁরা জানতে পারেন, দিনাজপুর থেকে ফোন করা ব্যক্তিরা আসলে প্রতারক। টাকা নেওয়ার জন্যই এমন প্রতারণার ফাঁদ পেতেছেন।

ফজলুল হক বলেন, এমনিতেই দুই সন্তানের মাকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা। তার মধ্যে এই প্রতারণার শিকার হয়ে পরিবারের সদস্যরা আরও ভেঙে পড়েছেন।