চটের থলের ভেতর থেকে ভেসে এল কান্নার শব্দ

চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি এলাকায় চটের থলের ভেতর থেকে ৪১ দিন বয়সী শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। কাজীর দেউড়ি, চট্টগ্রাম, ১৬ সেপ্টেম্বর। ছবি: প্রথম আলো
চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি এলাকায় চটের থলের ভেতর থেকে ৪১ দিন বয়সী শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। কাজীর দেউড়ি, চট্টগ্রাম, ১৬ সেপ্টেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

পড়ে থাকা একটি চটের থলে থেকে ভেসে আসছে কান্নার শব্দ। এক রিকশাচালকের কানে আসে সেই শব্দ। শব্দ শুনে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বিষয়টি জানান তিনি। এরপর পুলিশ সদস্য এসে থলের ভেতর থেকে এক শিশুকে উদ্ধার করে নিয়ে যান হাসপাতালে।

চট্টগ্রাম শহরের কাজীর দেউড়ি সার্কিট হাউসের সীমানাপ্রাচীরের ভেতর আজ সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। উদ্ধার হওয়া শিশুটির নাম মনীষা চক্রবর্তী। শিশুটির বয়স মাত্র ৪১ দিন। শিশুটি বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

জানতে চাইলে রিকশাচালক জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ কান্নার আওয়াজ শুনতে পান। কিন্তু কান্নার আওয়াজ পেলেও কোনো শিশুকে দেখতে পাচ্ছিলেন না। আওয়াজ শুনে এগিয়ে গিয়ে দেখেন, মুখ বন্ধ চটের থলের ভেতর থেকে একটি শিশুর কান্নার শব্দ আসছে। পরে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সদস্যকে ডাক দেন।

শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান পুলিশ সদস্য দেবরঞ্জন চাকমা। কাজীর দেউড়ি, চট্টগ্রাম, ১৬ সেপ্টেম্বর। ছবি: প্রথম আলো
শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান পুলিশ সদস্য দেবরঞ্জন চাকমা। কাজীর দেউড়ি, চট্টগ্রাম, ১৬ সেপ্টেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের নায়েক দেবরঞ্জন চাকমা বলেন, ‘এক লোক ডাক দেওয়ার পর গিয়ে দেখি, চটের থলের ভেতরে একটি শিশু কান্না করছে। থলের মুখ বন্ধ। তৎক্ষণাৎ শিশুটিকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। কেউ হয়তো শিশুটিকে থলের মধ্যে ভরে সীমানাপ্রাচীরের গ্রিলের ফাঁক দিয়ে ভেতরে ফেলে গেছে।’

খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান শিশুটির বাবা স্কুলশিক্ষক মানিক চক্রবর্তী। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, চারতলার বাসায় শিশুটিকে দাদির কাছে রেখে মা হ্যাপি চক্রবর্তী ওষুধ কিনতে নিচে নামেন। কিন্তু বাসায় ফিরে মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটিকে না পেয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানান। পরে খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান। কে বা কারা শিশুটিকে চুরি করেছে, সেটি খুঁজে বের করতে পুলিশের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।

চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কীভাবে শিশুটি বাসা থেকে চুরি হলো, সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, খোঁজাখুঁজি শুরু হওয়ায় কেউ শিশুটিকে কাজীর দেউড়ি এলাকায় ফেলে যায়।