ছাত্রী বহিষ্কারের কারণ জানালেন বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য

উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কারের ব্যাখ্যা দেন। বশেমুরবিপ্রবি, গোপালগঞ্জ, ১৭ সেপ্টেম্বর। ছবি: প্রথম আলো
উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কারের ব্যাখ্যা দেন। বশেমুরবিপ্রবি, গোপালগঞ্জ, ১৭ সেপ্টেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) আইন বিভাগের ছাত্রী ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কারের কারণ জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য। আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিন ওই বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে নাসির উদ্দিন বলেন, একাধিক অপরাধে ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে ফেসবুকে অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা লেখার মতো অপরাধ করেছেন।

নাসির উদ্দিন বলেন, আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ফেসবুক ও ই-মেইল আইডি হ্যাক করেছেন। এ ছাড়া তিনি ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইট হ্যাক করে পরীক্ষা বানচালের ষড়যন্ত্র করেছেন। উপাচার্য দাবি করেন, ওই ছাত্রী দুবার তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপাচার্য। এ সময় উপাচার্য জানান, ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া যদি ভুল স্বীকার করে তাঁর কাছে আবেদন করেন, তাহলে বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া হবে।

১১ সেপ্টেম্বর ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সে সময় কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, উপাচার্যের ফেসবুক আইডি হ্যাক ও প্রশাসন সম্পর্কে ফেসবুকে খারাপ মন্তব্য করার দায়ে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে কত দিনের জন্য ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কার করা হলো, সেটা জানানো হয়নি।

সেই সময় ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া বলেছিলেন, ‘কীভাবে ফেসবুক আইডি হ্যাক করতে হয়, আমি তো সেটাই জানি না। তা ছাড়া উপাচার্য স্যারের ফেসবুক হ্যাক করতে যাব কেন? আমি কোনো দিন বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে কোনো মন্তব্য করিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন নিয়ে তো প্রশ্নই ওঠে না।’

ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া দ্য ডেইলি সানের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি। এ ছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের সংগঠনেরও সদস্য ছিলেন। তবে কয়েকজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জিনিয়াকে ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের সংগঠন থেকে বহিষ্কারের জন্য উপাচার্যপন্থীরা চাপ দেন। এরই জেরে জিনিয়াকে ওই সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

খুলনায় মানববন্ধন
ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কারের কারণে খুলনায় মানববন্ধন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধন করেন।

মানববন্ধনে বশেমুরবিপ্রবির প্রশাসনকে সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি জায়গায় তুচ্ছ ঘটনায় কোনো সাংবাদিককে বহিষ্কার বিশ্ববিদ্যালয়ের মননশীলতায় বড় আঘাত। বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তচিন্তার জায়গা। সেখানে সামান্য একটি মন্তব্য সহ্য করতে পারছে না বশেমুরবিপ্রবির প্রশাসন। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তচিন্তার দ্বার রুদ্ধ করবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওই মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশে ওই ডিসিপ্লিনের শিক্ষকেরাও অংশ নেন।