মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ, ৩ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দুই ব্যবসায়ীকে থানায় ধরে এনে মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগের পর প্রাথমিক তদন্ত শেষে অভিযুক্ত তিন পুলিশ সদস্যকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে।

অভিযুক্ত তিন পুলিশ সদস্য হলেন জোরারগঞ্জ থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শওকত আলী, কনস্টেবল জিল্লুর করিম ও হাসান আলী। গতকাল সোমবার মিরসরাই-জোরারগঞ্জ সার্কেল কার্যালয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী দুই ব্যবসায়ী।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, ১৫ সেপ্টেম্বর রাত নয়টার দিকে কাঠ ব্যবসায়ী জামশেদ আলম ও তাঁর বন্ধু নূর হোসেন করেরহাট ইউনিয়নের শুভপুর সেতু এলাকায় যান। আগে থেকেই সেখানে সাদাপোশাকে থাকা এএসআই শওকত আলী ও দুই কনস্টেবল তাঁদের দেহ তল্লাশি করেন। তল্লাশিতে কিছু না পেয়ে একজন কনস্টেবল সেতুর নিচ থেকে দুই বোতল ফেনসিডিল নিয়ে আসেন। এরপর তাঁদের হাতকড়া পরিয়ে রাত ১০টার দিকে থানায় আনা হয়। থানার দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে টেবিলের ওপর ফেনসিডিলের বোতল দুটি রেখে দুজনের ছবি তুলে মামলার ভয় দেখানো হয়। মামলা থেকে বাঁচতে দুই লাখ টাকা দাবি করেন এএসআই শওকত। একপর্যায়ে এক লাখ টাকা দিলে তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সময় জামশেদের সঙ্গে থাকা ৪১ হাজার ও নূরের সঙ্গে থাকা ২৪ হাজার টাকা নিয়ে নেওয়া হয়। এরপর পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে বারিয়ারহাট বাজারে গিয়ে এটিএম বুথ থেকে ২০ হাজার টাকা তোলেন নূর। বাকি ১৫ হাজার টাকা এক বন্ধুর থেকে নেন। এরপর রাত একটার দিকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে কাউকে কিছু না জানানোর শর্তে দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগীদের একজন জামশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৫ সেপ্টেম্বর রাতে মাদক দিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে আমাদের কাছ থেকে পুলিশ টাকা আদায় করে। ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে সার্কেল কার্যালয়ে গিয়ে আমি লিখিত অভিযোগ করেছি। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।’

জানতে চাইলে মিরসরাই-জোরারগঞ্জ থানা সার্কেলের সহকারী জ্যেষ্ঠ পুলিশ সুপার সামছুদ্দিন মোহাম্মদ ছালেহ আহমেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর প্রাথমিক তদন্ত করে জোরারগঞ্জ থানার এএসআই শওকত আলী, কনস্টেবল জিল্লুর করিম ও হাসান আলীকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।