অস্ত্রোপচারের পর প্রসূতির মৃত্যু: তদন্ত কমিটি করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ফরিদপুরের ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর ‘চিকিৎসায় অবহেলায়’ প্রসূতি খায়রুন্নাহার তানির মৃত্যুর অভিযোগ তদন্তে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কমপক্ষে তিনজন প্রসূতি বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন। তদন্তের ফলাফল তিন সপ্তাহের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

‘ফরিদপুরে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ’ শিরোনামে ১ সেপ্টেম্বর একটি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে আসা খবর যুক্ত করে ৮ সেপ্টেম্বর রিটটি করেন আইনজীবী মো. ইশতিয়াক আহমেদ, যার ওপর আজ শুনানি হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এম কে রহমান ও এম মঈনুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

আইনজীবী এম মঈনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, স্বাস্থ্যসচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতি ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসায় অবহেলায় তানির মৃত্যুতে কেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসকসহ তিন বিবাদীকে দায়ী করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের সেক্রেটারি জেনারেল সালাউদ্দিন আহমেদ, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও শিশু হাসপাতালের অতিথি চিকিৎসক দিলরুবা জেবা এবং হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে বলে জানান এম মঈনুল ইসলাম।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ফরিদপুরের ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে চিকিৎসক ও সংশ্নিষ্টদের অবহেলায় প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন রোগীর পরিবারের সদস্যরা। গত ৩০ আগস্ট সকালে ফরিদপুর হালিমা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক খায়রুন্নাহার তানি সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে কন্যাশিশুর জন্ম দেন। পরদিন শনিবার সকালে হাসপাতালে মারা যান তানি। তানির স্বামী আইনজীবী সফওয়ান করিম অভিযোগ করেন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক দিলরুবা জেবা নির্ধারিত সময়ের আগেই রোগীকে সিজারিয়ান অপারেশন করায় এই মৃত্যু হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, অসুস্থ হওয়ার পর শিশু হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের ডেকে পাওয়া যায়নি।

ওই শিশু হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক মো. সালাহউদ্দীন ফরিদ বলেন, ‘ডা. জেবা এই শিশু হাসপাতালে অতিথি চিকিৎসক হিসেবে প্রসূতিদের অস্ত্রোপচার করে থাকেন। আমাদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই প্রসূতির চিকিৎসাসেবায় গাফিলতি করেনি।’

চিকিৎসক দিলরুবা জেবা বলেন, ‘রোগী যথেষ্ট জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পূর্বনির্ধারিত সময়েই অস্ত্রোপচার করে তাঁকে সুস্থ করার চেষ্টা করেছি আমরা। তার প্রেশার বেশি ছিল এবং তিনি প্রি-একলামশিয়ায় ভুগছিলেন। হার্ট ফেইলিওর বা ব্রেন হেমারেজে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।