ইসলামী ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে একজন রিমান্ডে

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ইসলামী ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ময়েজ উদ্দিন মিয়া (২৯) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে রাজধানীর দারুস সালাম থানার পুলিশ।

আদালতের অনুমতি নিয়ে ময়েজ উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দারুস সালাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আসাফুদ্দৌলাহ সরদার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকের টাকা তুলে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ময়েজ উদ্দিন। তাঁর বাড়ি গোপালগঞ্জে।

২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ইসলামী ব্যাংকের মিরপুর-১ শাখার ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে দারুস সালাম থানায় মামলা করেন। মামলার পর ময়েজ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার আদালতে হাজির করে পুলিশ। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত ময়েজ উদ্দিনকে এক দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি ময়েজ উদ্দিন ইসলামী ব্যাংকের একজন গ্রাহক। ১ সেপ্টেম্বর তিনি ইসলামী ব্যাংকের মিরপুর শাখায় হাজির হন। আই ব্যাংকিং ও বাংলাদেশ ব্যাংকের আরটিজিএস সিস্টেমের মাধ্যমে তাঁর ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা অন্য ব্যাংকের হিসাবে স্থানান্তর করার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু ব্যাংকের সার্ভার এবং আরটিজিএস সিস্টেমের সমস্যার কারণে টাকা স্থানান্তর হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী টাকা তাঁর ব্যাংক হিসাবে ফেরত আসে। তবে সার্ভার ও আরটিজিএস সফটওয়্যারের সমস্যার কারণে ২ লাখ ১৫ হাজার টাকার পরিবর্তে (মোট ২২ বার রিফান্ড হয়) আসামি ময়েজ উদ্দিনের হিসাবে মোট ৪৪ লাখ ২ হাজার ৫৩০ টাকা জমা হয়। ময়েজ উদ্দিনের হিসাবে এত টাকা এলেও তিনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে কিছু জানাননি। পরে ওহিদুজ্জামান নামের আরেকজনকে সঙ্গে নিয়ে ৩ থেকে ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৪৪ লাখ টাকা তুলে নেন আসামি ময়েজ।

মামলায় ব্যাংক কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান আরও বলেন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানার পর ১৫ সেপ্টেম্বর আসামি ময়েজ উদ্দিনকে ব্যাংকে আসতে বলা হয়। সেদিনই তিনি ব্যাংকে আসেন। ব্যাংকের ৪৪ লাখ টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করার কথা স্বীকার করেন। পরদিন ময়েজ উদ্দিন তাঁর হিসাবে ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ৫৫০ টাকা জমা দেন। তাঁর হিসাব থেকে ২০ লাখ টাকা সমন্বয় করা হয়। বাকি ২৪ লাখ টাকা ফেরত চাইলে তিনি তা দিতে অস্বীকার করেন।

পুলিশ ও আদালত সূত্র বলছে, ১৬ সেপ্টেম্বর আসামি ময়েজ উদ্দিন ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানান, তিনি ৪৪ লাখ টাকা তুলে নেন।

তদন্ত কর্মকর্তা ও দারুস সালাম থানার এসআই আসাফুদ্দৌল্লাহ সরদার আদালতকে লিখিত প্রতিবেদন দিয়ে জানান, পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণামূলকভাবে আসামি ময়েজ উদ্দিন ইসলামী ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করে হুমকি দেন।

আসামি ময়েজ উদ্দিনের পক্ষ থেকে আদালতে হলফনামা দিয়ে জানানো হয়েছে, তাঁর কাছে ব্যাংক ২৪ লাখ টাকা পাবে। ব্যাংকের টাকা তিনি পরিশোধ করবেন।

ইসলামী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া আজ বুধবার রাতে টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে মামলা হয়েছে। কারিগরি ত্রুটির কারণে কীভাবে ওই আসামির ব্যাংক হিসাবে এত টাকা গেল, তা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যাচাই করে দেখছে।